হেমন্ত মৈথিল, লখনউ: উত্তরপ্রদেশে একের পর এক মসজিদ নিয়ে বিতর্কের মাঝেই এবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মহাকুম্ভ উপলক্ষে শুক্রবার প্রয়াগরাজে উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিলেন, 'কোনও বিতর্কিত কাঠামোকে মসজিদ বলা উচিত নয়। খোদ আল্লা এর অনুমতি দেয় না। এটা ইসলাম বিরোধী।'
মহাকুম্ভ উপলক্ষে সেজে উঠেছে প্রয়াগরাজ। সমস্ত ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার সেখানে উপস্থিত হয়েছে যোগী। শুক্রবার সেখানে এক অনুষ্ঠানে হয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বার্তা দেন যোগী আদিত্যনাথ। বলেন, "কোনও বিতর্কিত কাঠামোকে মসজিদ বলা একেবারেই উচিত নয়। আমরা ওই বিতর্কিত জায়গাকে মসজিদ বলা বন্ধ করলে সেখানে মানুষের আসাও বন্ধ হবে।" এমনকি মুসলিম ধর্মের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ইসলাম ধর্মেও বলা রয়েছে, কারও আস্থায় আঘাত করে সেখনে মসজিদের কাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। এই ধরনের জায়গায় ইসলাম ধর্মের মানুষ প্রার্থনা করলে আল্লা সেই প্রার্থনা অনুমোদন করেন না। ফলে যেখানে প্রার্থনার অনুমতি আল্লা দেন না, সেখানে কেন প্রার্থনা করা হচ্ছে। কেন সেখানে ইসলামি উপাসনার জন্য কাঠামো গড়া হচ্ছে?"
পাশাপাশি যোগী আরও বলেন, ''সনাতনীরা উপাসনার জন্য মন্দিরে যায়, ইসলামিক রীতিনীতির জন্য নয়। তাই কোনও বিতর্কিত কোনও কাঠামোকে মসজিদ বলা একেবারেই উচিত নয়। এবং অতীতের এই চিন্তাধারাকে পরিবর্তন করে নতুন ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করার সময় এসেছে। প্রগতিশীল চিন্তাধারাকে অবলম্বন করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। অতীতের বিবাদ আঁকড়ে না থেকে আমাদের ঐক্য ও সম্প্রীতি গড়ে তোলার দিকে মনযোগ দিতে হবে।'' একইসঙ্গে অযোধ্যায় রামমন্দিরের বর্ষপূর্তি নিয়েও এদিন যোগী বলেন, "এক বছর আগে অযোধ্যায় রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা আসলে ঈশ্বরের কৃপা। ৫০০ বছরের অপেক্ষার অবসান। পাশাপাশি ১৪৪ বছর পর এমন একটি শুভ সময়ে এখানে মহাকুম্ভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।"
উল্লেখ্য, অযোধ্যার রামমন্দিরকে কেন্দ্র করে যে বিবাদের সূত্রপাত হয়েছিল পরবর্তী সময়ে সেই বিতর্ক আরও ব্যপক আকার নিয়েছে। অযোধ্যার পর আইনি লড়াই চলছে মথুরার শাহি ইদগা, কাশীর জ্ঞানবাপী এবং সম্ভলের জামা মসজিদ নিয়েও। হিন্দুপক্ষের দাবি, এই জায়গাগুলিতে পূর্বে মন্দির ছিল। পরে তা ভেঙে মসজিদ গড়া হয়। সম্ভলের জামা মসজিদকে কেন্দ্র করে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। উত্তরপ্রদেশজুড়ে চলতে থাকা এই মন্দির-মসজিদ বিতর্কের মাঝেই এবার বার্তা দিলেন যোগীর।