সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশব্যাপী সাইবার জালিয়াতির মাঝেই এবার খোদ ব্যাঙ্কের অন্দরেই প্রতারণা চক্র। রীতিমতো ছক কষে তথ্য হাতিয়ে এক সংস্থার ১২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল ব্যাঙ্কেরই কর্মীর বিরুদ্ধে। প্রতারণার এমন অভিনব পন্থা দেখে বিস্মিত তদন্তকারীরা। বেসরকারি ব্যাঙ্কে এই প্রতারণার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তদন্তে নামে সাইবার ক্রাইম বিভাগ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক ও আরও তিনজনকে।
জানা গিয়েছে, ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট ছিল বেঙ্গালুরুর সংস্থা ড্রিমপ্লাগ পেটেক সল্যুশন প্রাইভেট লিমিটেডের। গত ১২ নভেম্বর ওই অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক কিছু লেনদেন নজরে পড়ে আধিকারিকদের। এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হয় সংস্থা। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, সংস্থার দুটি অ্যাকাউন্ট থেকে ১২.২ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এরপরই তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ব্যাঙ্ককর্মী হওয়ার সুযোগ নিয়ে ওই সংস্থার অ্যাকাউন্টে কিছু রদবদল করে অ্যাকাউন্টের দখল বা অ্যাক্সেস নিয়ে নেয়। তবে টাকা তুলতে সংস্থার বোর্ডের অনুমতির প্রয়োজন। তার জন্য নকল সাক্ষর করে বোর্ডের প্রস্তাব তৈরি করা হয়। যেখানে ইমেল আইডি ও ফোন নম্বরও বদলে দেয় অভিযুক্তরা। সবকিছু সম্পন্ন করার পর টাকা তোলার জন্য ব্যাঙ্কের তরফেও অনুমোদন আদায় করা হয়।
পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্কের তরফে অনুমোদন মেলার পর ওটিপির মাধ্যমে ৩৭ বার লেনদেন করা হয়। ইমেল আইডি ও ফোন নম্বরও বদলে দেওয়ার জেরে লেনদেনের কোনও তথ্যও সংস্থার কাছে যায়নি। বেসরকারি ব্যাঙ্কের রেকর্ড থেকে জানা যায়, ২০২১ সালে অ্যাকাউন্ট খোলার সময় চারটি ইউজার আইডি দেওয়া হয়েছিল ব্যাঙ্কে। যার মধ্যে মাত্র দুটি আইডি চালু রয়েছে। অপরাধীদের লক্ষ্য ছিল অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার। তবে দুটি আইডি নিষ্ক্রিয় থাকায় ১২ কোটি টাকা তুলতে সক্ষম হন জালিয়াতরা।
ঘটনার তদন্তে নেমে রিলেশনসিপ ম্যানেজার বৈভব পিথাদিয়া, ব্যাঙ্কের এজেন্ট নেহা বেন বিপলভাই, ইনস্যুরেন্স এজেন্ট ও বৈভবের এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ওই ব্যাঙ্কের কমিশন এজেন্টকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে যেভাবে এই জালিয়াতি করা হয়েছে তাতে রীতিমতো বিস্মিত তদন্তকারীরা। কীভাবে অভিযুক্তরা ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করল তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি টাকা উদ্ধারেরও চেষ্টা চালানো হচ্ছে।