সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহারাষ্ট্রের নির্বাচনের মাত্র ১০ দিন আগে বিজেপির প্রচার কৌশল নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিলেন জোটসঙ্গী অজিত পওয়ার। এনসিপি নেতা স্পষ্ট বলছেন, হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করে ভোটে জেতার যে কৌশল বিজেপি নিয়েছে, সেটা মহারাষ্ট্রে অন্তত কাজ করবে না। মহারাষ্ট্রের মানুষ ধর্মীয় বিভাজনে বিশ্বাস করে না।
আসলে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে জাতগণনার দাবি তুলে মহারাষ্ট্রে বিজেপির ‘হিন্দুত্ব’ ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরাতে পেরেছিল কংগ্রেস। অনেকটাই ফিকে হয়ে গিয়েছিল সংঘ তথা বিজেপির হিন্দু ঐক্যের ডাক। লোকসভা ভোটের আগে ফের সেই হিন্দু ঐক্যকে পুনরুত্থান করতে মরিয়া বিজেপি। সেই লক্ষ্যে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের 'বাটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে ' স্লোগানকে হাতিয়ার করছে গেরুয়া শিবির। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়’ স্লোগানও ব্যবহার করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই কাজটি করার চেষ্টা করছে খোদ আরএসএস। আরএসএস প্রায় ৬৫টি সহযোগী সংগঠনকে আসরে নামিয়ে দিয়েছে শুধু হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করার কাজে। এই বিশাল কর্মকাণ্ডের লক্ষ্য একটাই, যে কোনও মূল্যে বিজেপি জোটকে ভোটে জেতানো। মূলত, দলিত এবং ওবিসি ভোটারদের টার্গেট করে এই কর্মসূচিগুলি নেওয়া হচ্ছে। জোর দেওয়া হচ্ছে হিন্দু ঐক্যে।
কিন্তু অজিত পওয়ার স্পষ্ট বলছেন, এই ধরনের প্রচার কৌশল মহারাষ্ট্রে কাজ করবে না। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "আমি শুরু থেকেই এই ধরনের প্রচারের বিরোধী। এটা হয়তো উত্তরপ্রদেশে কাজ করতে পারে। ঝাড়খণ্ডে কাজ করতে পারে। অন্য কোনও রাজ্যে কাজ করতে পারে। কিন্তু মহারাষ্ট্রে করবে না। মহারাষ্ট্র ওই রাজ্যগুলির মতো নয়।" অজিতের কথায়, এটা ছত্রপতি শিবাজীর ভূমি, সাহু মহারাজের ভূমি, মহাত্মা ফুলের ভূমি। মহারাষ্ট্রের মানুষ এই ধরনের প্রচার পছন্দ করে না।
আসলে অজিত পওয়ার বিজেপির সঙ্গে জোটে থাকলেও আদপে তিনি ধর্মনিরপেক্ষ মানসিকতার। তাঁর ভোটব্যাঙ্কও তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ। তাছাড়া ইদানিং মহারাষ্ট্রের মহাজুটিতে তিনি বেশ কোণঠাসা। তাই অজিত যেভাবে প্রকাশ্যে বিজেপির প্রচার কৌশলের বিরোধিতা করলেন, সেটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। মহারাষ্ট্রে ভোটের পর অন্য সমীকরণের ইঙ্গিত আগে থেকেই দিয়ে রাখলেন তিনি।