বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: তুমুল হট্টগোলের মধ্যেই শুক্রবার লোকসভায় পাস হয়ে গিয়েছে অর্থবিল ২০২৩। তার মধ্যেই এদিন বড় ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ (Nirmala Sitharaman)। তিনি বলেছেন, “পেনশনের ইস্যুটি দেখার জন্য অর্থ সচিবের অধীনে একটি কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করছি। সাধারণ নাগরিকের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে কর্মীদের আর্থিক পরিস্থিতির বিবেচনা করে তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য একটি নয়া কাঠামো তৈরির প্রস্তাব করছি। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার উভয়ে মিলেই এই নয়া কাঠামো গড়ে তুলবে, জাতীয় পেনশন স্কিম (NPS)-কে আরও উন্নত করা হবে।”
পুরোনো এবং নতুন পেনশন স্কিম (NPS) নিয়ে টানাপোড়েন চলছে দেশজুড়ে। বেশ কয়েকটি অ-বিজেপি শাসিত রাজ্য পুরনো পেনশন স্কিমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর থেকেই কেন্দ্র সরকারের উপর চাপ বাড়ছিল। এই স্কিম অনুযায়ী, অবসরের পর সরকারি কর্মীরা নিজের শেষ মূল বেতনের ৫০ শতাংশ মাসিক পেনশন হিসাবে পান। আর কেন্দ্রের যে বর্তমান স্কিম চালু আছে তাতে, সরকারি কর্মীদের নিজেদের বেতনের একটি অংশ পেনশন তহবিলে জমা রাখতে হয়। সরকারও ওই একই পরিমাণ অর্থ কর্মীদের পেনশন স্কিমে জমা রাখে। তারপর সেই জমানো টাকা থেকে অবসরের পর সামান্য পরিমাণ পেনশন দেওয়া হয় ওই সরকারি কর্মীকে। বারবার এ নিয়ে পর্যালোচনার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। এবার সেই বিষয়ে নড়েচড়ে বসল কেন্দ্র।
[আরও পড়ুন: সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজ কী? হাই কোর্টের নির্দেশের পর গাইডলাইন জারি রাজ্য পুলিশের]
যদিও চলতি মাসের শুরুর দিকে কেন্দ্র সরকার সংসদে জানিয়েছিল, ১ জানুয়ারি, ২০০৪-এর পর থেকে নিযুক্ত কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মীদের ক্ষেত্রে পুরানো পেনশন স্কিম ফিরিয়ে আনার কোনও প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে না। তারপরে এদিন নির্মলার ঘোষণা তাৎপর্যপূর্ণ। সামনেই দেশের বহু রাজ্যের ভোট রয়েছে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই পেনশন স্কিম নিয়ে সরকারের অবস্থান পরিবর্তন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহালমহল। গত বছর হিমাচলের ভোট (Himachal Assembly Election) পেনশন ইস্যুতে সরগরম হয়েছিল। সেখানে ক্ষমতা হারিয়েছিল বিজেপি।
[আরও পড়ুন: রবিবার দিনভর হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনে বন্ধ ট্রেন চলাচল, ভোগান্তির আশঙ্কা]
এদিকে এদিন লোকসভায় অর্থবিল ২০২৩ পাশ করিয়ে নিয়ে বাজেট সংক্রান্ত কাজ একপ্রকার শেষ করে নিয়েছে সরকার পক্ষ। তাতে, সংসদের বাজেট অধিবেশেন নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হওয়ার জল্পনা উস্কে দিয়েছে। এদিন নির্মলা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখলেও কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই, বিরোধীদের ওয়েলে নেমে মোদি-আদানি ভাই ভাই, উই ওয়ান্ট জেপিসি স্লোগানের মধ্যেই ধ্বনি ভোট বিলটি পাশ করিয়ে নিয়েছে সরকার।