সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডিজিটাল অ্যারেস্ট নিয়ে এবার বিস্ফোরক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। দাবি করা হচ্ছে, গত ১০ মাসে এই প্রতারণার শিকার হয়ে ২,১৪০ কোটি টাকা খুইয়েছেন সাধারণ মানুষ। থাইল্যান্ড, হংকং, লাওসের মতো একাধিক দেশ থেকে ভারতের মাটিতে চলছে এই ডিজিটাল প্রতারণা।
গত শনিবার বেঙ্গালুরু এক আদালতে এই মামলার চার্জশিট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। সেখানেই এজেন্সির তরফে দাবি করা হয়েছে, ভারতের মাটিতে কিছু এজেন্ট বসিয়ে বিরাট এই প্রতারণার ফাঁদ পেয়েছে অপরাধীরা। পুরো জিনিসটা পরিচালিত হচ্ছে কম্বোডিয়া, মায়ানমার, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, হংকং, লাওসের মতো একাধিক দেশ থেকে। সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের কথা বলে তো কখনও ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে চলছে এই প্রতারণা। এবং দেশের পাশাপাশি বিদেশের ব্যাঙ্কেও জমা হচ্ছে এই প্রতারণার অর্থ। এই মামলার তদন্তে নেমে প্রায় ১৫৯ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে ইডি। যার পুরোটাই ডিজিটাল অ্যারেস্টের মাধ্যমে হাতানো। পাশাপাশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ জনকে।
চার্জশিটে ইডির তরফে দাবি করা হয়েছে, এই চক্র চালাতে অজস্র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়েছিল অপরাধীরা। মনে করা হচ্ছে, প্রথমে প্রতারণার টাকা জমা করা হত অ্যাকাউন্টগুলিতে। তার পর সেটা বদলে নেওয়া হত ক্রিপ্টোকারেন্সিতে। গ্রেপ্তার হওয়া ওই ৮ অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু সন্দেহজনক নথি, ব্যাঙ্কের চেক বই ও ২ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইডি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এই ডিজিটাল অ্যারেস্ট নিয়ে উদ্বেগের সুর শোনা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গলায়। ‘মন কি বাত’ রেডিও অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, যেভাবে ডিজিটাল অ্যারেস্টের মাধ্যমে মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে তা বিপজ্জনক। তাঁর কথায়, ”প্রতারকরা ফোনে এমন পরিবেশ তৈরি করছে যে মানুষ ভয় পেয়ে যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, এক্ষুনি এটা করো, নয়তো গ্রেপ্তার করা হবে। আসলে পুরোটাই প্রতারণা।” এই ধরনের ঘটনায় অযথা ভয় না পেয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে এই ধরনের ফোনকল রেকর্ড করার পরামর্শ দেন মোদি। বলেন, কোনও সরকারি তদন্তকারী সংস্থা অনলাইনে কাউকে ধমক বা হুমকি দেয় না। এবং এমন ফোন এলে ন্যাশনাল সাইবার হেল্পলাইনে ফোন করার কথা বলেন। এর পর এই প্রতারণা রুখতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে।