সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিমানে ও বিমানবন্দরে বোমাতঙ্ক অব্যাহত। বুধবার সন্ধ্যায় মম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ বিমানবন্দর উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ফোন আসে সিআইএসএফের কন্ট্রোল রুমে। যার পর হুলস্থুল পড়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে বোমাতঙ্কের জেরে নাগপুর থেকে কলকাতাগামী উড়ান জরুরি অবতরণ করল ছত্তিশগড়ের রায়পুর বিমানবন্দরে।
বুধবার সন্ধ্যায় মুম্বই বিমানবন্দরের সিআইএসএফ কন্ট্রোল রুমে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি ফোন করেন। তিনি দাবি করেন, মুম্বই-আজারবাইজান উড়ানে মহম্মদ নামের এক যাত্রীর কাছে শক্তিশালী বোমা রয়েছে। বিমানবন্দর উড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই ফোন পাওয়ামাত্র বিমানবন্দরের নিকটবর্তী থানায় খবর দেন সিআইএসএফন আধিকারিকরা। দ্রুত বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় বাড়তি নজরদারি শুরু হয়। যাত্রী নিরাপত্তায় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যদিও বোমা মেলেনি বলেই খবর।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে বোমাতঙ্ক ছড়ায় নাগপুর থেকে কলকাতাগামী ইন্ডিগোর একটি উড়ানে। ছত্তিশগড়ের রায়পুর বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করানো হয় বিমানটিকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণের আশঙ্কায় রায়পুরে দ্রুত যাত্রীদের বিমান থেকে নামানো হয়েছে। সেখানে বিমানটিকে পরীক্ষা করে দেখেন বম্ব স্কোয়াড এবং অন্য বিশেষজ্ঞরা। যদিও সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবর মাসে সাড়ে চারশোর ভুয়ো ফোনে ৩০০-র বেশি বিমানে বোমাতঙ্ক ছড়ায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সোশাল মিডিয়ায় হুমকি দেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যেই অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রামমোহন নায়ডু জানিয়েছেন, বোমাতঙ্ক ছড়ানোর চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু একাধিক বৈঠক, সিদ্ধান্তের পরও তা কমার কোনও লক্ষণ নেই। কয়েকদিন ধরে সরকার এ ধরনের উড়ো খবর ছড়ানো ব্যক্তিদের নো ফ্লাই তালিকাভুক্ত করবে বলে ঠিক করেছে। একইসঙ্গে জানা গিয়েছে, এইসব বোমাতঙ্কের অধিকাংশই সোশাল মিডিয়া ‘এক্স’ মারফত আসছে। যে ‘এক্স’ হ্যান্ডলগুলি থেকে এই হুমকিবার্তা পাঠানো হচ্ছে সেগুলি চিহ্নিত করতে ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টার (১৪সি), ইন্ডিয়ান কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সার্ট-ইন) একযোগে কাজ করছে।
সূত্রের খবর, বোমাতঙ্ক ছড়াতে যে ভুয়ো ফোন ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলির নেপথ্যে ভিপিএন। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করেই হুমকিবার্তা পাঠানো হচ্ছে। আর সে কারণেই ওই বার্তা প্রেরকদের দ্রুত চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। যে আইপি অ্যাড্রেসগুলি ব্যবহার করে বোমার হুমকিবার্তা পাঠানো হচ্ছে, তার মধ্যে বেশ কয়েকটি চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব হুমকির ৭০-৮০ শতাংশ আসছে ভারতের বাইরে থেকে। বেশির ভাগ হুমকিদাতার আইপি বা ইন্টারনেট প্রটোকল অনুযায়ী অবস্থান জার্মানি, ব্রিটেন, জার্মানি, কানাডা ও আমেরিকা। তবে দেশের ভিতর থেকেও হুমকি আসছে।