সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি নিয়ে দেশ যখন উত্তাল ঠিক তখনই বিতর্কিত আইন তৈরি করে জেলবন্দি গ্যাংস্টার নেতাকে মুক্তি দিচ্ছে বিহার সরকার। সূত্রের খবর, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক গ্যাংস্টার নেতাকে জেল থেকে শীঘ্রই মুক্তি দেবে নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) সরকার। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীরা বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করছে বিজেপি (BJP)।
আরজেডি নেতা আনন্দ মোহন সিং, যার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ রয়েছে, তাঁকে মুক্তি দিতে চলেছে বিহারের নীতীশ কুমারের সরকার। ১৯৯৪ সালে এক দলিত আইএএসকে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হন আনন্দ মোহন সিং (Ananda Mohon Singh)। ২০০৭ সালে তাঁকে ফাঁসির সাজা শোনায় এক স্থানীয় আদালত। পরে পাটনা হাই কোর্ট ফাঁসির সাজা কমিয়ে ওই RJD নেতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয়। তখন থেকে প্রায় ১৫ বছর জেলে আরজেডি নেতা।
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটের আগে নির্লিপ্ত মনোভাব সংঘ পরিবারের, বেকায়দায় বঙ্গ বিজেপি]
কিন্তু সম্প্রতি বিহারের আরজেডি-জেডিইউ (JDU) জোট সরকার জেলমুক্তির নিয়মে বদল এনেছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন থেকে সরকারি আমলা খুনে অভিযুক্তরাও সাজা মকুবের আওতায় আসবেন। সেই আইন ব্যবহার করেই জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হবে আরজেডির (RJD) গ্যাংস্টার নেতাকে। আপাতত ছেলের বিয়ের জন্য তিনি প্যারোলে মুক্ত। এই গ্যাংস্টার নেতাকে মুক্তি দেওয়া নিয়ে বিরোধীর প্রবল আক্রমণের মুখে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। বিজেপির অমিত মালব্য বলছেন,”নীতীশ কুমার নতুন করে গ্যাংস্টারদের সঙ্গে ঘর করা শিখছেন শুধু ক্ষমতা দখল করে রাখার জন্য বা দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য।”
বিহার সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রবল বিরোধিতা করেছেন নিহত আইএএস আধিকারক এস কৃষ্ণণের স্ত্রী ঊষা কৃষ্ণণও। তিনি বলছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে অপরাধীরা উৎসাহ পাবে। বার্তা যাবে, “যে আপনি অপরাধ করতেই পারেন, রাজনীতির ছত্রছায়ায় থাকলেই বেঁচে যাবেন।” এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: মোবাইল মুখের কাছে আনতেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ, কেরলে মৃত্যু ৮ বছরের শিশুকন্যার]
বিতর্কিত আনন্দ মোহন সিং অবশ্য জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার খবরে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। তিনি বলছেন,”দ্রুত রাজনৈতিক জীবনে ফিরতে চাই। বিজেপিতেও অনেকে আছেন, যারা জানেন আমি কোনও অন্যায় করিনি।” তাঁর বক্তব্য,”দেশে এমন বহু বিজেপি নেতা আছে, যারা অপরাধ করার পরও পুরোপুরি মুক্তি পেয়ে যায়, জেলে পর্যন্ত যেতে হয় না। আবার অনেক গুরুতর অপরাধ করার পরও জেল থেকে মুক্ত হয়ে যান।” এ প্রসঙ্গেই গুজরাটের বিলকিস মামলার কথা মনে করান তিনি।