সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৩১ অক্টোবর, ১৯৮৪। নিজের বাসভবনে দুই দেহরক্ষীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর। সেই দুই দেহরক্ষীর অন্যতম বিয়ন্ত সিংয়ের পুত্র সর্বজিৎ সিং খালসা এবার নির্দল প্রার্থী হয়েছেন পাঞ্জাবের ফরিদকোট কেন্দ্র থেকে। জোর কদমে প্রচারও শুরু করেছেন তিনি। সোমবার সর্বজিতের প্রচার থেকেই উঠল বিতর্কিত স্লোগান। সর্বজিৎ সিংকে 'শহিদ পুত্র' বলে উল্লেখ করে স্লোগান উঠল, 'বিয়ন্ত সিং অমর রহে'।
ইন্দিরা গান্ধীর পিতা জহরলাল নেহেরুর ৬০ তম মৃত্যুদিবস ছিল গত সোমবার। ওই দিন ফরিদপুর কেন্দ্রের (Faridkot) ভাইরূপা গ্রামে গাড়ি ও বাইকের মিছিল বের করেন সর্বজিৎ সিং খালসা(Sarabjit Singh Khalsa)। বিপুল জমায়েতও হয় সেই মিছিলে। সর্বজিৎ সিংয়ের সমর্থনে মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে 'অমর শহিদের পুত্র সর্বজিৎ', পাশাপাশি সমর্থকদের বলতে শোনা যায়, 'শহিদ বিয়ন্ত সিং অমর রহে'। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের নির্বাচনী মিছিলে এমন শ্লোগানের ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক চরম আকার নেয়।
[আরও পড়ুন: যাবজ্জীবন সাজা থেকে মুক্তি, খুনের মামলায় হাই কোর্টের নির্দেশে স্বস্তিতে রাম রহিম]
প্রসঙ্গত, ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর ইন্দিরা গান্ধীকে (Indira Gandhi) গুলি করে হত্যা করেন তাঁর দুই দেহরক্ষী বিয়ন্ত সিং ও সতবন্ত সিং। জানা যায়, বিয়ন্ত ইন্দিরাকে গুলি চালানোর পর নিজের হাতের আগ্নেয়াস্ত্র ছুড়ে ফেলে দেন। এবং বলে ওঠেন, ”আমার যা করার ছিল করেছি। এবার তোমাদের যা ইচ্ছা তা করতে পারো।” পরে এক রক্ষীর কথায় উত্তপ্ত হয়ে জলের পাত্র ছুড়ে মারেন তিনি। এরপরই অন্য রক্ষীদের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যান বিয়ন্ত। অন্য হত্যাকারী সতবন্তকে পরে ফাঁসি দেওয়া হয়। ভারতের ইতিহাসের রক্তাক্ত সেই ৩১ অক্টোবর আজও দগদগে। নৃশংস সেই অতীত নতুন করে উস্কে দিয়ে পাঞ্জাবে ভোট প্রচারে নেমেছেন বিয়ন্ত সিংয়ের পুত্র ৪৫ বছর বয়সি সর্বজিৎ সিং খালসা। সূত্রের খবর, এই নির্বাচনে তাঁকে সমর্থন জুগিয়েছে একাধিক নিষিদ্ধ খালিস্তানি সংগঠন।
অবশ্য নির্বাচনী ময়দানে সর্বজিৎ সিং খালসা এই প্রথমবার নন, এর আগে ২০১৯ সালে বহুজন সমাজবাদী পার্টির টিকিটেও সর্বজিৎ ভোটে লড়েছেন। লড়েছিলেন ২০১৪ সালেও। তার আগে ২০০৭ সালে বিধানসভা নির্বাচনেও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু কোনওবারই জিততে পারেননি। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি। কিন্তু বিপুল ধনসম্পত্তির মালিক সর্বজিৎ। ২০১৪ সালে নির্বাচনে লড়ার সময় তিনি তাঁর সম্পত্তি ঘোষণা করেছিলেন। দেখা যায় সব মিলিয়ে সাড়ে তিন কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিক সর্বজিৎ।