সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একের পর এক শুধু বৈঠক হচ্ছে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই বিতর্কিত কৃষি আইন (Farm Laws) নিয়ে সরকার এবং কৃষক পক্ষের মধ্যে ৯ দফায় বৈঠক হয়েছে। আরও এক দফার বৈঠকের দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। সমস্যা মেটা তো দূরের কথা, আলোচনায় তেমন অগ্রগতিও হয়নি। যা নিয়ে এবার রীতিমতো ক্ষোভ জমছে কৃষকদের অন্দরে। কৃষক সংগঠনের নেতারা মনে করছেন, আসলে আলোচনার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করে সরকার কৃষকদের ঐক্যে চিড় ধরাতে চাইছে। যা আসলে ষড়যন্ত্র।
রবিবার বিক্ষোভকারী কৃষকদের অন্যতম সংঠন অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভার (All India Kisan Sabha) নেতা হান্নান মোল্লা দাবি করেছেন,”গত প্রায় দু’মাস ধরে আমরা এখানে ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছি। কৃষকদের মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে। বদলে সরকার আমাদের কী দিচ্ছে? তারিখ পে তারিখ। যাতে আমরা ক্লান্ত হয়ে যাই এবং এই জায়গাটা ছেড়ে চলে যাই।” কৃষকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ অবশ্য আগেই উঠেছে। কৃষক সংঠনগুলি অভিযোগ করছে, তাঁদের আন্দোলনকে দমন করতে এবার বিভিন্ন এজেন্সিকে আসরে নামাচ্ছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ খলিস্তানি সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিসে’র সঙ্গে যোগাযোগ এবং আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে জেরা করতে ৪০ জনকে তলব করেছে এনআইএ (NIA)। এঁদের মধ্যে রয়েছেন পাঞ্জাবি অভিনেতা দীপ সিধু এবং কৃষক নেতা বলদেব সিং সিরসা। এই তলবের নেপথ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র দেখছেন কৃষকরা। এদিকে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর রবিবারই দাবি করেছেন, বেশিরভাগ কৃষক এই আইনের পক্ষেই। তাই আইন প্রত্যাহারের দাবি মানা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে, প্রত্যাহার বাদে আইন সম্পর্কে বিক্ষোভকারীদের যে কোনও পরামর্শ গুরুত্ব দিয়ে দেখবে সরকার।
[আরও পড়ুন: ‘NIA-কে দিয়ে কৃষকদের ভয় দেখানো হচ্ছে’, বিজেপিকে তোপ প্রাক্তন জোটসঙ্গী অকালি দলের]
এদিকে কৃষি আইন খতিয়ে দেখতে সুপ্রিম কোর্ট যে চার সদস্যের কমিটি গড়ে দিয়েছিল, তা নিয়ে বিবাদ অব্যাহত। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের পরও যে কৃষক সমস্যার সমাধান হবে না, সেটা শীর্ষ আদালতের রায়দানের পরই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। বিতর্কিত কৃষি আইন (Farm Laws) কার্যকরে স্থগিতাদেশ দিলেও আদালতের রায় সন্তুষ্ট করতে পারেনি কৃষকদের। বিশেষ করে শীর্ষ আদালত বিতর্কিত আইন তিনটি খতিয়ে দেখার জন্য যে কমিটি গড়ে দিয়েছিল, সেটা নিয়ে প্রবল আপত্তি ছিল কৃষক সংঠনগুলির। বিরোধিতার জেরে সেই কমিটি থেকে নিজেকে ইতিমধ্যেই সরিয়ে নিয়েছেন ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা ভুপিন্দর সিং মান (Bhupinder Singh Mann)। এবার পুরো কমিটিটিই নতুন করে গঠন করার দাবি উঠছে। যদিও, কৃষক সংগঠনগুলি সেই দাবির পক্ষে না। তাদের সাফ কথা,”এই ধরনের কোনও প্রস্তাব তাঁরা দেননি।” তাঁদের স্পষ্ট দাবি, আইন বাতিল ছাড়া অন্য কিছুতেই তাঁদের আন্দোলন বন্ধ হবে না।