সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সরিতা মালি। মালিনী হলে নামটা বোধহয় মানাত বেশি। কারণ ছোট থেকে একসময় বাবার সঙ্গে মুম্বইয়ের বাজারে ফুল বিক্রি করতেন তিনি। এবার এই তরুণী উড়ে যাচ্ছেন মার্কিন মুলুকে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি (PHD) করতে।
ফুল বিক্রেতা থেকে শিক্ষা ক্ষেত্রে এই বিশাল সাফল্য নিশ্চিতভাবেই আলাদা আলোয় চিনিয়েছে সরিতাকে। তবে তাঁর জীবনের গল্পটা যে কোনও উপন্যাসকে হার মানাবে। বর্তমানে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টারে হিন্দি সাহিত্য নিয়ে পিএইচডি করছেন সরিতা। জুলাই মাসেই তাঁর পিএইচডি জমা পড়ে যাবে। তার আগে জেএনইউতেই করেছেন এমফিল।
[আরও পড়ুন: চাকরি খোঁজা এখন আরও সহজ, আমূল বদলে যাচ্ছে রাজ্যের এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংক]
অথচ একসময় গণেশ চতুর্থী হোক কিংবা দীপাবলি, দশেরা কিংবা অন্য কোনও উৎসব, বাবার সঙ্গে মুম্বইয়ের রাস্তায় ফুল বিক্রি করতেন সরিতা। তার পাশাপাশিই চলেছে পড়াশোনা। স্কুলের পড়াশোনায় ফাঁকি দেননি এতটুকু। এমনকী জিএনইউ থেকে ছুটি পেয়ে যখনই বাড়ি গিয়েছেন তখনও বাবাকে মালা গেঁথে সাহায্য করেছেন ব্যবসার কাজে। গত দু’ছর যদিও বাবার ব্যবসায় বড় রকম মন্দা দেখা দিয়েছে অতিমারীর কারণে। কিন্তু তার আগে পড়াশোনার সঙ্গে নিত্য কাজে সাহায্য করাটাই ছিল রুটিন। কিন্তু সরিতা চেয়েছেন পড়াশোনার সিঁড়ি বেয়েই বিশ্বের দরবারে পৌঁছতে।
২০১০ সালে জেএনইউয়ের কথা শোনেন সরিতা। স্নাতক স্তরের পড়াশোনার সময়ই মাথায় জেদ চেপে যায়, সুযোগ পেতেই হবে দিল্লির ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১৪ সালে সেই সুযোগ পান তিনি। সরিতা জানিয়েছেন, মানুষের কাছ থেকে দুই বিপরীত প্রতিক্রিয়া পান তিনি। “অনেকেই আমার জীবন থেকে অনুপ্রেরণা পায়। অনেকে আবার ভাবে আমার বাবা এত লড়াই করে জীবনধারণ করে অথচ আমি পড়াশোনা নিয়েই এতবছর কাটিয়ে দিচ্ছি। তবে বিশ্বাস ছিল বলেই আমি এখানে পৌঁছতে পেরেছি,” বলছেন সরিতা।
[আরও পড়ুন: SSC দুর্নীতি মামলা: বুধবারই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে CBI দপ্তরে হাজিরার নির্দেশ হাই কোর্টের]
সরকারের কাছে জেএনইউয়ের তরুণতম স্কলারের আবেদন, সরকারি তহবিল থেকে যাতে শিক্ষাক্ষেত্রে আরও অনুদান দেওয়া সম্ভব হয়। পরবর্তী স্তরে তাঁর গন্তব্য ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তাঁকে। সেই সরিতা যিনি জন্ম থেকে চারপাশে শুধু ফুলই দেখেছেন আর মালা গেঁথেছেন, তাঁর হাতেই উঠছে এখন শুভেচ্ছা বার্তার ফুলের স্তবক।