সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কুলদীপ সেঙ্গারের মৃত্যুদণ্ডই চান তিনি। সেটা না হওয়া পর্যন্ত তাঁর লড়াই জারি থাকবে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপের জামিন খারিজ হওয়ার পরেই মুখ খুললেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতা।
দোষী সাব্যস্ত হওয়া বিজেপির বহিষ্কৃত বিধায়ক কুলদীপের সাজা স্থগিত করে তাঁকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল সিবিআই। সোমবার সেই মামলায় দিল্লি হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করেছে শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ, এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না কুলদীপ। পাশাপাশিই চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে হলফনামা জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এই নির্দেশের পরেই সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতা। তিনি বলেছেন, "আমি বিচার পাব। সুপ্রিম কোর্টের উপর সেই আস্থা রয়েছে। আমার লড়াই জারি থাকবে। যতক্ষণ না ওর ফাঁসি হচ্ছে, ততক্ষণ এই লড়াই চালিয়ে যাব। ওর মৃত্যুদণ্ড হলে তবেই আমি বিচার পাব। আমার বাবা বিচার পাবেন।" সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নির্যাতিতার মা-ও। তিনি বলেন, "সুপ্রিম কোর্ট আমাদের কথা শুনল। এর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।" পাশাপাশি দিল্লি হাইকোর্টের এক বিচারপতির উদ্দেশেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতা। কুলদীপের মামলায় দিল্লি হাইকোর্টের যে বেঞ্চ রায় দিয়েছিল, সেই বেঞ্চের এক বিচারপতির উদ্দেশে তিনি বলেন, "আমি জানি না উনি কী ভাবছিলেন। কতটা ভালোবাসা থাকলে এ রকম রায় দেওয়া যায়!" সিবিআইয়ের যে দল উন্নাওকাণ্ডের তদন্ত করেছে, সেই দলের এক তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে কুলদীপের 'ঘনিষ্ঠতা' রয়েছে বলে দাবি করেছেন নির্যাতিতা।
প্রসঙ্গত, উন্নাওয়ে গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়ার পরেও দিল্লি হাই কোর্ট সম্প্রতি কুলদীপের সাজা স্থগিত রেখে তাঁকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল। এই ঘটনায় দেশ জুড়ে ক্ষোভ ছড়ায়। নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছিলেন, তাঁরা দিল্লি হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। বুধবার সন্ধ্যায় দশ জনপথে গিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের লোকজন বড় কোনও আইনজীবীর সাহায্য চেয়েছিলেন। এর পর সিবিআই-ই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপেই স্বস্তির বদলে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন নির্যাতিতা ও তাঁর আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার উন্নাওয়ের নির্যাতিতা প্রশ্ন তুলেছিলেন, “এতদিন সিবিআই কী করছিল? সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার দোষী কুলদীপ সেঙ্গারের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেছিলেন। আমাদের সুপ্রিম কোর্টে আরও সতর্ক থাকতে হবে।”
