সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানকে তালিবানের হাতে তুলে দিয়ে আমেরিকায় ফিরেছিল মার্কিন সেনা। একইসঙ্গে সেখানে ফেলে এসেছিল মারণাস্ত্র। সেই অস্ত্রই এখন ব্যবহৃত হচ্ছে জম্মু ও কাশ্মীরে। উপত্যকায় জঙ্গিদের হাতে উঠেছে মার্কিন অত্যাধুনিক রাইফেল এম৪। গত কয়েক মাসে জম্মু ও কাশ্মীরে সেনা অভিযানে মৃত্যু হওয়া জঙ্গিদের কাছে পাওয়া গিয়েছে এই এম-৪। গোয়েন্দা বিভাগের দাবি, আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তান হয়ে জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গিদের হাতে উঠে আসছে এই মারণ হাতিয়ার।
ইন্ডিয়া টুডের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন অস্ত্র ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। আফগানিস্তান থেকে চোরাপথে এই অস্ত্র এনে তা তুলে দেওয়া হচ্ছে জঙ্গিদের হাতে। এর পর সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করছে এই জঙ্গিরা। সূত্রের খবর, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তাদের হাতে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে এম৪ কার্বাইন রাইফেল ও একে৪৭। জঙ্গিদের হাতে এমন অত্যাধুনিক অস্ত্র উঠে আসায় স্বাভাবিকভাবেই চিন্তা বেড়েছে ভারত সরকারের।
সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারতে অনুপ্রবেশের লক্ষ্যে পাক সীমান্তে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে অসংখ্য জঙ্গি। তাদের লক্ষ্য শীতে গোটা এলাকা বরফে ঢেকে গেলে তার ফায়দা নিয়ে সীমান্ত পার করার। সূত্রের দাবি, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি সংগঠনগুলির প্রধান মাথাদের সঙ্গে পাকিস্তানের আধিকারিকদের বৈঠক হয়। যেখানে জঙ্গিদের হাতে এম৪-এর মতো মারণাস্ত্র তুলে দেওয়ার আবেদন জানানো হয় জঙ্গি সংগঠনের নেতাদের তরফে।
২০১৭ সালে জম্মু ও কাশ্মীরে প্রথম কোনও জঙ্গির হাতে দেখা গিয়েছিল এম৪ রাইফেল। সেনার গুলিতে তলহা রশিদ মাহমুদের মৃত্যুর পর তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় এই রাইফেল। এই জঙ্গি ছিল জইশ ই মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজাহারের ভাইপো। এর পর থেকে একাধিক সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনার উপত্যকায় মৃত জঙ্গিদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে এই রাইফেল। সম্প্রতি কাঠুয়া, রিয়াসি ও পুঞ্চে জঙ্গি হামলায় এই রাইফেল ব্যবহৃত হয়েছে।
উল্লেখ্য, এম৪ কারবাইন রাইফেল ১৯৮০ সালে প্রথমবার তৈরি করা হয়েছিল। মুলত ন্যাটো সেনার জন্য এটি প্রস্তুত করা হলেও পরবর্তী সময়ে একাধিক দেশকে এই অস্ত্র বিক্রি করেছে আমেরিকা। এই রাইফেলের বুলেট স্টিলের তৈরি। যা বুলেটপ্রুফ গাড়ির পাশাপাশি সিমেন্টের দেওয়াল ভেদ করতে সক্ষম। মাত্র এক মিনিটে এই বন্দুক ৭০০ থেকে ৮০০ বার গুলি ছুঁড়তে পারে। যার রেঞ্জ ৫০০ থেকে ৬০০ মিটার। ৩ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত যেতে পারে এর গুলি। স্বাভাবিকভাবেই এহেন মারণাস্ত্র চিন্তা বাড়াচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনীর।