সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত বুধবার দক্ষিণ ভারতের একটি অনার কিলিংয়ের (Honour Killing) নৃশংসতায় চমকে গেছিল দেশ। ভালবেসে এক মুসলিম তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন এক হিন্দু যুবক। যে মানুষটিকে ভিন ধর্মে বিয়ে করার দোষে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল, আজ জানা গেল, তিনি তাঁর স্ত্রীর ইদের কেনাকাটার জন্য সোনার চেন বেচে দিয়েছিলেন।
ভয়ংকর খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল হায়দরাবাদের (Hyderabad) সারুরনগর এলাকায়। মৃত যুবকের নাম বিল্লাপুরাম নাগরাজু। তিনি একটি গাড়ির শো-রুমে সেলসম্যানের কাজ করতেন। বুধবার রাত ন’টা নাগাদ বাইকে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় দুই ব্যক্তি নাগারাজুকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত নাগারাজুর স্ত্রী আসরিন সুলতানার দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ধর্ষণ করেছে বাবা! ন্যায়বিচার চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্যাতনের ভিডিও পোস্ট তরুণীর]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে একটি মন্দিরে বিয়ে করেন নাগরাজু -আসরিন। এরপর থেকেই নাসরিনের পরিবার তাঁদের খুনের হুমকি দিচ্ছিল। যদিও নাগারাজু নিজের থেকেও বেশি চিন্তিত ছিলেন স্ত্রীকে নিয়ে। যে কারণে কর্মস্থলে যাওয়ার আগে স্ত্রীকে বোনের বাড়িতে রেখে আসতেন। নাগারাজু যে গাড়ির শো-রুমে কাজ করতেন, সেখানকার এইচআর ম্যানেজার এদিন জানান, স্ত্রীর ইদের কেনাকাটার জন্য নিজের সোনার চেন বেচে দিয়েছিলেন নিহত যুবক।
তিনি বলেন, “নাগারাজু আমাকে জানিয়েছিলেন, তিনি ২৫ হাজার টাকায় নিজের সোনার চেন বেচে দিয়েছেন। যাতে স্ত্রী ইদের কেনাকাটা করতে পারেন। একজন সৎ নিষ্ঠাবান কর্মী ছিলেন নাগারাজু। সাধারণত শো-রুমের ইউনিফর্ম বদলে সাধারণ পোশাকে বাড়ি ফিরতেন। সেদিন দেরি হয়ে যাওয়ায় ইউনিফর্ম পরেই বেরিয়েছিলেন। তাছাড়া বোনের বাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ফেরার ব্যাপারও ছিল।”
[আরও পড়ুন: সব ধর্মের পড়ুয়াকেই ইদে ফেজ টুপি পরার নির্দেশ দিয়ে বিপাকে স্কুলের প্রিন্সিপাল]
এদিকে নাগারাজুর এক বন্ধু তালারু দানিয়ে জানিয়েছেন, আসরিনের এক ভাই সৈয়দ মোবিন আহমেদ প্রথম থেকে নাগারাজু-আসরিনের বিয়ে নিয়ে আপত্তি তোলে। প্রতিশোধ নেবে বলে হুমকি দেয়। যা নিয়ে চিন্তিত ছিল সদ্য বিবাহিত দম্পতি। যদিও নাগারাজু নিজের থেকে বেশি স্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ভিন ধর্মে বিয়ে করার দোষে যুবককেই খুন হতে হল।