সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়া (Russia) থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি নিয়ে আমেরিকাকে কড়া বার্তা দিল ভারত। সূত্রের খবর, ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে দেশের জ্বালানি আমদানি নিয়ে ওয়াশিংটনের রাজনীতি মেনে নেওয়া হবে না বলে কড়া বার্তা দিয়েছে নয়াদিল্লি।
[আরও পড়ুন: রাশিয়ার হয়ে লড়তে ইউক্রেনের উদ্দেশে পাড়ি দিল ১ হাজার দুর্ধর্ষ চেচেন যোদ্ধা]
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। প্রায় একপক্ষ কালের বেশি সময় ধরে ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে দুই দেশের মধ্যে। এহেন পরিস্থিতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জব্দ করতে রাশিয়ার উপর একগুচ্ছ আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান-সহ একাধিক দেশ। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করাও বন্ধ করে দিয়েছে ওয়াশিংটন। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংককে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের ‘সুইফট’ ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এহেন পরিস্থিতিতে বন্ধু ভারতের কাছে বিশেষ ছাড়ে অপরিশোধিত তেল বিক্রির প্রস্তাব পেশ করে মস্কো।
জানা গিয়েছে, মস্কোর প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যেই বাজার দরের চেয়ে কম দামে রাশিয়া থেকে তিন মিলিয়ন ব্যারেল তেল কিনেছে ‘ইন্ডিয়ান ওয়েল কার্পোরেশন’। এই বিষয়ে ইঙ্গিতে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলিকে ভারত সরকারের তোপ, “যারা নিজেরা রাশিয়া থেকে তেল কিনছে তাদের মুখে নিষেধাজ্ঞার কথা মানায় না। ভারতের জ্বালানি প্রয়োজনীয়তা নিয়ে রাজনীতি মেনে নেওয়া হবে না।”
বলে রাখা ভাল, রাশিয়ার (Russia) থেকে বিশেষ ছাড়ে অপরিশোধিত তেল কেনার বিষয়ে সম্প্রতি ভারতকে সতর্ক করেছে আমেরিকা। ওয়াশিংটনের মন্তব্য, রুশ তেল আমদানির জন্য হয়তো ভারতের উপরে কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না। কিন্তু এর ফলে ইতিহাসে নয়াদিল্লির অবস্থান কিন্তু লেখা থাকবে অন্যভাবে।ইতিহাসের ভুল দিকেই থাকবে নয়াদিল্লি। সরাসরি না বলেও এভাবেই ভারতকে বিঁধেছে আমেরিকা। এক সাংবাদিক সম্মেলনে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব জেন সাকির কাছে জানতে চাওয়া হয় ভারত কি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে? জবাবে তিনি বলেন, ”আমার মনে হয় না এর ফলে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে। কিন্তু এও মনে হয়, পাশাপাশি এটাও ভাবতে হবে এই মুহূর্তে ইতিহাস লেখা হলে কে কোন পক্ষে থাকবে। রাশিয়ার নেতৃত্বকে সমর্থনের অর্থই তাদের আগ্রাসনকেও সমর্থন করা। যে আগ্রাসনের ফলাফল ভয়ংকর।”
উল্লেখ্য, প্রয়োজনের অন্তত ৮০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করে ভারত। এরমধ্যে মাত্র ৩% তেল আসে রাশিয়া থেকে। সম্প্রতি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আবহে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম ১৩০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। ফলে অতিরিক্ত কয়েক হাজার কোটি টাকা দেশের রাজকোষ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে তেলের দামে বিশেষ ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছে মস্কো। ফলে সেই প্রস্তাব নিয়ে ভাবনা চিন্তা চলছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। আর দেশের জ্বালানি প্রয়োজন মেটানোর বিষয়ে যে তৃতীয়পক্ষের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না তা আমেরিকার কাছে স্পষ্ট করে দিল নয়াদিল্লি।