সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের জন্য দৈনিক ১৪ ঘণ্টা কাজের প্রস্তাবকে ঘিরে রীতিমতো শোরগোল শুরু হয়েছে কর্নাটকে। এরই মাঝে প্রকাশ্যে এল কর্নাটকের শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ লাডের বিবৃতি। সোমবার কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রী জানালেন, '১৪ ঘণ্টা কাজের বিল পাশ করতে সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি। যদিও সরকার এখনও এই বিল নিয়ে চিন্তাভাবনার পর্যায়ে রয়েছে।'
কাজের সময় বৃদ্ধি নিয়ে চাপানউতোরের মাঝেই সোমবার কর্নাটকের বিধানসৌধের সামনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন শ্রমমন্ত্রী। তিনি বলেন, "এই বিল আনা হচ্ছে আইটি সংস্থাগুলির প্রবল চাপের জেরে। এটা শুধুমাত্র তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীর একার সিদ্ধান্ত নয়, সংস্থাগুলির তরফে সরকারের উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। যেহেতু সংস্থাগুলির তরফ থেকে এই প্রস্তাব এসেছে তাই শ্রম বিভাগের দৃষ্টিকোণ থেকে এটিকে মূল্যায়ন করছি।” পাশাপাশি তিনি বলেন, "এটা যেহেতু তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে একটা বড়সড় সমস্যার বিষয় তাই এর সমাধানে উদ্যোগী সরকার। যদিও এখনও পর্যন্ত সরকারের কোনও বিভাগ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কিছু করেনি। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র থেকে সরকারের কাছে এই চাপ এসেছে। আমরা চাই শিল্প সংস্থাগুলির পাশাপাশি সকলে এই বিষয়ে তাঁদের মতামত দিক। সবদিক বিচার করার পরই এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেব আমরা।"
[আরও পড়ুন: মহামারী পেরিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশ, অর্থনৈতিক সমীক্ষায় শক্তিশালী ভারতের ছবি আঁকলেন নির্মলা]
প্রসঙ্গত, কর্নাটক সরকার দোকান ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিয়মে সংশোধন আনার কথা ভাবছে। এই পরিস্থিতিতেই সেরাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কাজের সময় করা হোক ১৪ ঘণ্টা। এর মধ্যে ১২ ঘণ্টা মূল কাজের সময়। ওভারটাইম ২ ঘণ্টার। এই মুহূর্তের শ্রমিক আইন অনুযায়ী তা ১২ ঘণ্টা (১০ ঘণ্টা+ ২ ঘণ্টা ওভারটাইম)। নয়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, আইটি/আইটিইস/ বিপিওর কর্মীদের দিনে ১২ ঘণ্টার বেশি কাজের অনুমতি দিতে হবে। কোনওভাবেই তা পর পর তিন মাসের নিরিখে ১২৫ ঘণ্টা অতিক্রম করবে না। সরকারের তরফে নাকি এই নিয়ে প্রাথমিক ভাবে বৈঠকও করা হয়েছে। তবে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। অচিরেই ক্যাবিনেটে তা আলোচিত হওয়ার কথা।
ইতিমধ্যেই কর্নাটক স্টেট আইটি/আইটিইস এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন তথা কিটুর তরফে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করা হয়েছে। সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, এরকম নিয়ম লাগু হলে এক-তৃতীয়াংশ মানুষ চাকরি ছেড়ে দেবে। জানানো হয়েছে, আইটি সেক্টরের ৪৫ শতাংশ অবসাদে ভুগছেন। অন্যদিকে ৫৫ শতাংশের শারীরিক সমস্যা রয়েছে। ফলে কাজের সময় বাড়ালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তাদের আর্জি, যন্ত্র নয়, মানুষ হিসেবে দেখা হোক কর্মীদের।