সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোররাতে জোড়া বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে জম্মু (Jammu) বিমানবন্দরের এয়ার ফোর্স স্টেশন। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি না হলেও অন্য এক আশঙ্কা তৈরি করে দিল এই হামলা। এই প্রথমবার, ভারতীয় সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাতে ব্যবহৃত হল ড্রোন (Drone Strike)। এতদিন সীমান্ত পার করে অস্ত্র পাচারে ব্যবহার হত এই যন্ত্র। এবার সরাসরি বিস্ফোরক ছুঁড়ে বিস্ফোরণ ঘটাতেও ব্যবহৃত হল এই ছোট্ট যন্ত্রটি। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে থাকা এলাকায় হামলা চালাতে তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারে এই ড্রোন।
জম্মুর এই সামরিক ‘বিমানঘাঁটি’ থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। ইতিপূর্বে সীমান্ত থেকে ১২ কিলোমিটার দূরেও ড্রোন মারফত অস্ত্র সরবরাহ করতে দেখা গিয়েছে। আর সেই কাজ করেছে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনগুলি। এবার সরাসরি হামলা চালাতে ড্রোন ব্যবহার হচ্ছে। ফলে এই বিস্ফোরণের পিছনে পাক জঙ্গি সংগঠনের হাত থাকার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু কেন হামলার হাতিয়ার হয়ে উঠল ড্রোন?
[আরও পড়ুন: জম্মু বিস্ফোরণ কাণ্ডে তদন্তে NIA-NSG বম্ব স্কোয়াড, সতর্কতা জারি পাঠানকোট সেনা ঘাঁটিতে]
সেনা সূত্রে খবর, আকারে অত্যন্ত ছোট। উপরন্তু অনেকটা নিচ দিয়ে উড়তে সক্ষম ড্রোন। ফলে তার উপস্থিতি ব়্যাডারে ধরাও পড়ে না। আকারে ছোট হওয়ায় নজর এড়িয়ে যে কোনও এলাকায় ঘাপটি মেরে থাকতে পারে ড্রোন। নজর এড়িয়ে রাতের অন্ধকারে হামলা চালাতে ড্রোনের জুড়ি মেলা ভার। সাধারণ ড্রোনগুলি ৩-৪ কেজি বিস্ফোরক পরিবহণ করতে পারে। আর উন্নতমানের ড্রোন হলে ৫-১৪ কেজি পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করতে পারে। তবে ৪ কেজি আইইডি বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জোরালো বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। যা সেনাবিমানের ক্ষতি করতে পারে। সেনার নজর এড়িয়ে কাশ্মীরে প্রবেশ করে নাশকতা চালানো বেশ বিপজ্জনক। উপরন্তু জঙ্গি সংগঠনগুলির ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। এমন পরিস্থিতিতে আনম্যানড আর্মি হিসেবে ড্রোন ব্যবহার সহজ এবং সুলভ।
তবে ছোট ড্রোন খুব বেশি দূর উড়তে পারে না। ২ থেকে তিন ঘণ্টা টানা উড়তে সক্ষম এগুলি। ১৪-১৫ কিলোমিটার দূরত্ব পার করতে পারে। ফলে সীমান্ত লাগোয়া সেনাঘাঁটি যেমন পাঠানকোট, অবন্তিপোরা সহজ টার্গেট হয়ে উঠতে পারে। আবার বিদেশি শক্তির মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলি পানাগড়, কলাইকুণ্ডার মতো ঘাঁটিতেও সহজে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। আর তাই ইতিমধ্যে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: Jammu বিমানবন্দরে জোড়া বিস্ফোরণ, ড্রোন থেকেই ছোঁড়া হয় বিস্ফোরক!]
অনেকেই মনে করছেন, জম্মুর এই বিস্ফোরণ স্রেফ ট্রেলার। বড়সড় কোনও নাশকতার ঘটনা ঘটানোর আগে পরীক্ষামূলকভাবে ড্রোন ব্যবহার করা হল। প্রসঙ্গত, এদিনই নরওয়াল এলাকা থেকে এক লস্কর জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার কাছেও বিপুল আইইডি মিলেছে। ফলে পাক-জেহাদিরা পাঠানকোটের মতো ভূস্বর্গের কোনও সামরিক ঘাঁটিতে বড়সড় নাশকতার ছক কষছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ও গোয়েন্দারা।