সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব বিতর্কে রায়দানের জের! কর্ণাটক হাই কোর্টের (Karnataka High Court) প্রধান বিচারপতিকে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এক আইনজীবী। তাঁর দাবি, তামিলনাড়ুর মাদুরাই জেলায় এক জনসভায় এক ব্যক্তি বিচারপতিকে খুনের হুমকি দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই হুমকি। এর পরই প্রধান বিচারপতি-সহ ৩ বিচারপতিকেই ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্ণাটক সরকার।
অভিযোগকারী আইনজীবী উমাপথি এস জানিয়েছেন, হোয়াটসঅ্যাপে তিনি একটি ভিডিও মেসেজ পেয়েছেন। যেখানে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ আবস্তিকে সরাসরি খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওই আইনজীবী জানিয়েছেন, “ভিডিওটি পেয়ে আমি চমকে উঠেছিলাম। তাই সঙ্গে সঙ্গে আমি পুরো ঘটনাটা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারকে জানাই।”
[আরও পড়ুন: ২০-২৬ মার্চের Horoscope: কেমন কাটবে সপ্তাহ? রাশি মিলিয়ে জেনে নিন কী রয়েছে আপনার ভাগ্যে]
লিখিত অভিযোগে উমাপথি এস জানিয়েছেন, সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ আমি হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভিডিও পাই। আমার এক পরিচিত সেটা পাঠিয়েছিল। যেখানে তামিল ভাষায় কর্ণাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে খুনের কথা বলা হচ্ছে। হিজাব বিতর্কে রায় দেওয়ার জেরে এই হুমকি।” তিনি আরও জানিয়েছেন, তামিলনাড়ুর মাদুরাই জেলার জনসভায় দাঁড়িয়ে এই হুমকি দিয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। তার হুমকিতে ঝাড়খণ্ডের বিচারপতির মৃত্যুর কথাও উঠে এসেছে। কিছুদিন আগে হাঁটতে বেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল এক বিচারপতির। সেই ঘটনার উল্লেখ করে ওই বক্তার হুঁশিয়ারি, “হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি কোথায় প্রাতঃভ্রমণ করতে যান, তা আমি জানি।”
প্রসঙ্গত, জানুয়ারি মাসের গোড়ায় কর্ণাটকের উডুপিতে ওই প্রি-ইউনিভার্সিটিতে আলিয়া-সহ ছ’ জন হিজাব পরিহিত ছাত্রীকে ক্লাসে বসতে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভট্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হিজাব পরিহিতরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না। প্রতিবাদে সরব হন আলিয়া-সহ কয়েকজন ছাত্রী। সেই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যজুড়ে। মামলা হয় হাই কোর্টেও। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের তরফে আলিয়া এবং তাঁর কয়েকজন সহপাঠীকে ‘মৌলবাদী’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। এর পরই কর্ণাটক হাই কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, “হিজাব ইসলামে বাধ্যতামূলক নয়।” আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাবের উপর জারি হওয়া নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখেন বিচারপতিরা। এর পরই মৌলবাদীদের হুমকির মুখে পড়তে হল বিচারপতিদের।