সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কালিয়াচকের প্রৌঢ়কে কোপানোর পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয় রাজস্থানের রাজসামন্দ জেলায়। নৃশংস সেই হত্যালীলার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। এবার গোটা ঘটনায় মুখ খুললেন মৃত মহম্মদ আফরাজুলের সঙ্গে নাম জড়িয়ে যাওয়া সেই তরুণী। খুনের নেপথ্যে যে ‘লাভ জেহাদ’-এর কথা বলেছিল শম্ভুলাল, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলেই দাবি তাঁর।
ভিডিওতে ৩৬ বছরের অভিযুক্ত শম্ভুলাল রেগার দৃঢ় কণ্ঠে জানিয়েছিল, নিজের হিন্দু বোনকে লাভ জেহাদের হাত থেকে রক্ষা করতেই প্রকাশ্যে প্রৌঢ়র প্রাণ নিয়েছে সে। কিন্তু এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন স্বয়ং ওই তরুণী। এক ইংরাজি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “২০১০ সালে মহম্মদ বাবলু শেখের সঙ্গে একবার পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছিলাম। মালদহের সৈয়দপুরের বাসিন্দা ছিলেন বাবলু। বছর দুয়েক একসঙ্গে মালদহেই থাকতাম আমরা। ২০১৩ সালে নিজেই রাজস্থানে ফিরে আসি। শম্ভু আমায় ফিরিয়ে আনেনি।” ২০ বছরের তরুণী আপাতত মা এবং ভাইয়ের সঙ্গেই থাকেন।
[পরস্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে একা পুরুষই দোষী কেন, প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের]
তরুণী আরও জানিয়েছেন, মালদহ থেকে নিজের মায়ের সঙ্গে একবার ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। তখনই রেগার তাঁকে রাজস্থানে ফেরাতে উদগ্রীব হয়ে ওঠে। মায়ের থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে মালদহেও এসেছিল সে। কিন্তু বোন তার সঙ্গে ফিরতে তখন রাজি হয়নি। অগত্যা একাই রাজস্থান ফিরে যায় শম্ভুলাল। অভিযুক্ত হত্যাকারী যে তরুণীর নিজের দাদা নয়, সে কথাও পরিষ্কার করে দিয়েছেন তিনি। বলেন, একই এলাকার থাকার সূত্রেই তাকে চিনতেন। দাদা হিসেবে রাখীও পরিয়েছিলেন। তাই লাভ জেহাদের ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যে বলেই দাবি তাঁর।
সম্প্রতি শম্ভুলালের এক প্রতিবেশী জানিয়েছিলেন, বাবলু শেখের লোকজন শম্ভুলালকে মারধর করেছিল। মুখে গুরুতর চোটও পেয়েছিল সে। কিন্তু পুলিশি বয়ানে তরুণী এমন অভিযোগ উড়িয়ে জানিয়ে দেন, “কোনও বাঙালি শ্রমিক শম্ভুলালকে হুমকি দেওয়ার কথা আমার অন্তত কানে আসেনি। এই সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। ব্যবসায়িক শত্রুতাতেই খুন করা হয়েছে আফরাজুলকে।”
[বন্দি কুলভূষণের সঙ্গে স্ত্রী ও মাকে সাক্ষাতের অনুমতি দিল পাকিস্তান]
এদিকে, মালদহে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূল নেতা সৌগত রায় এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আফরাজুলের বাড়িতে স্ত্রী গুলবাহার বিবি ছাড়াও রয়েছে ছোট মেয়ে হাবিবা। “পরিবারকে কোনও অভিযোগ দায়ের করতে হবে না। প্রশাসনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।” বলেন ফিরহাদ। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজস্থানের ডিজিপির সঙ্গে কথা বলেন এ রাজ্যে ডিজি সুরজিত পুরোকায়স্ত। প্রবাসী বাঙালিদের রাজস্থানে নিরাপত্তা কড়া করতেই কথা বলেন ডিজি। রাজস্থানের তরফে কঠোর নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
The post আফরাজুল খুনে ‘লাভ জেহাদের’ তত্ত্ব ভিত্তিহীন, দাবি রাজস্থানের তরুণীর appeared first on Sangbad Pratidin.