সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহামারির কোপে সর্বস্ব খুইয়েছেন। না আছে কাজ, না অর্থের সংস্থান। লকডাউনের সময় কারও সাহায্য পাওয়ার প্রত্যাশাও নেই। খাদ্যাভাবে অনেকেই পায়ে হেঁটে ২০০-২৫০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। অনেকেই আটকে ছিলেন রাজধানীর বুকে। অনাহারে বা অর্ধাহারে কাটছিল দিন। উত্তরপ্রদেশ সরকার এই পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant workers) জন্য এক হাজার বাস নামানোর সিদ্ধান্ত নিতেই ওরা যেন প্রান ফিরে পেলেন। বাড়ি ফিরে প্রিয়জনকে দেখার সাধ, পেটপুরে একবেলা খাওয়ার ইচ্ছা, স্বাস্থ্য সচেতনতার বিধি-নিষেধ অমান্য করতে বাধ্য করল ওদের।
[আরও পড়ুন: এবার তেলেঙ্গানায় মৃত এক বৃদ্ধ, মৃত্যুর পর পাওয়া গেল আক্রান্তের রিপোর্ট]
ফলাফল, শনিবার রাতে দিল্লির আনন্দ বিহার বাসস্ট্যান্ডে দেখা গেল হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের ভিড়। এদের কেউ থাকেন বিহারের কোনও দেহাতি গ্রামে, কেউ বা ওড়িশার সীমানা লাগোয়া গ্রামে। খুঁজে দেখলে ওই ভিড়ে বাংলার শ্রমিকদেরও দেখা মিলবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করতেই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে এদের জীবন। কাজ খুইয়ে, অস্থায়ী বাসস্থান খুইয়ে দিশেহারা হয়ে উঠেছিলেন। শনিবার লকডাউন উপেক্ষা করেই পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য হাজার খানেক বাস নামায় উত্তরপ্রদেশ সরকার। শ্রমিকদের পৌঁছে দেওয়া হয় বিহার এবং উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন প্রান্তে। খবর পেতেই দিল্লির বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হোন হাজার হাজার মানুষ। আনন্দ বিহার বাসস্ট্যান্ড যেন ছোটখাটো ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে পরিণত হয়।
[আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে নয়া তহবিল গঠনের ঘোষণা মোদির]
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিল্লির বাসস্ট্যান্ডের এই ছবি শুধু বিপজ্জনক নয়, রীতিমতো উদ্বেগের। এই শ্রমিকরা রাজধানী দিল্লি ও তৎসংলগ্ন এলাকায় কাজ করতেন। এই এলাকাগুলিতে বহু করোনা রোগী ধরা পড়েছে। অথচ, এদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব তো দুরের কথা, ন্যূনতম দূরত্বও নেই। প্রশাসনের নাকের ডগায় এই ধরনের জমায়েত হয়ে গেল অথচ সরকার কোনও ব্যবস্থা করল না! যা অবাক করছে বিশেষজ্ঞদের। এভাবে চলতে থাকলে আটকানো যাবে না গোষ্ঠী সংক্রমণ, আশঙ্কা তাঁদের। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অবশ্য বলছেন, তিনি উত্তরপ্রদেশের সব পরিযায়ী শ্রমিকদের আইসলেশনে রাখবেন। কিন্তু তা কি আদৌ সম্ভব? সংখ্যাটা তো নেহাত কম নয়।
The post লকডাউন ভেঙে হাজার হাজার শ্রমিকের ভিড়, বিপদঘণ্টা বাজাচ্ছে দিল্লির এই ছবি appeared first on Sangbad Pratidin.
