সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানের ড্রোন হামলা থেকে স্বর্ণমন্দিরকে (Golden Temple) রক্ষা করতে বেনজির পদক্ষেপ নিয়েছিল সেনা। শিখ সম্প্রদায়ের প্রবিত্র এই তীর্থস্থানে দেওয়া হয়েছিল এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বসানোর অনুমতি। সোমবার এই তথ্য প্রকাশ্যে আনলেন বায়ুসেনা আধিকারিক ল্যাফটেন্যান্ট সুমের ইভান ডিকুনহা।
সোমবার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই আধিকারিক বলেন, ''স্বর্ণমন্দির কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। পাক হামলা রুখতে স্বর্ণমন্দিরের কর্তৃপক্ষের তরফে আমাদের অনুমতি দেওয়া হয় ওই চত্বরে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও প্রয়োজনীয় সমরাস্ত্র মজুত রাখার। শুধু তাই নয়, স্বর্ণমন্দিরের ইতিহাসে বোধহয় প্রথমবার মন্দিরের সমস্ত আলো নিভিয়ে দেওয়া হয় যাতে হামলা চালাতে আসা ড্রোনগুলি আমরা দেখতে পাই।'' তিনি আরও বলেন, "স্বর্ণমন্দিরে যে হামলা হতে পারে এমন সম্ভাবনার কথা আমাদের তরফে জানানো হয়েছিল মন্দির কর্তৃপক্ষকে। এখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী এখানে আসেন। তাঁদের নিরাপত্তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই তীর্থস্থান রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ করার অনুমতি দেওয়া হয় মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে।"
এর আগে এই ইস্যুতে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলেছিলেন সেনাবাহিনীর ১৫ নম্বর ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) মেজর জেনারেল কার্তিক সি শেষাদ্রি। তিনি জানান, "৮ মে রাতে স্বর্ণমন্দির লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায় পাক সেনা। পাকিস্তানের কোনও নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল না। তাই সাধারণ নাগরিক ও জনপ্রিয় পর্যটনস্থলকে যে নিশানা করা হবে তা বুঝতে পেরেছিলাম আমরা। তাই আগে থেকে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েন করা হয় স্বর্ণমন্দিরকে রক্ষা করতে। ৮ মে রাতে সেখানে পাকিস্তান হামলা শুরু করলে তা রুখে দেওয়া হয়। গুলি করে নামানো হয় একাধিক পাক ড্রোন। পবিত্র স্বর্ণমন্দিরে একটা আঁচড় পর্যন্ত পড়তে দেয়নি সেনাবাহিনী।"
উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ২৬ জনের। তার পরেই ৭ মে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করার জন্য ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে ভারতীয় সেনা। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা জঙ্গিদের আঁতুড়ঘর। ভারতের হামলার পালটা জম্মু ও কাশ্মীর থেকে গুজরাট পর্যন্ত বেলাগাম ড্রোন হামলা চালায় পাক সেনা। তা রুখে দেওয়া তো বটেই পাকিস্তানের একের পর এক সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয় ভারতীয় সেনা। সেই হামলায় বার্তা দেওয়া হয়, বাড়াবাড়ি করলে পাকিস্তানের কপালে আরও দুঃখ রয়েছে।
