সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হামলা, পাল্টা হামলায় উত্তেজনার পারদ চড়ছিল গত কয়েক মাস ধরেই। কিন্তু গত দু’সপ্তাহে নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। ভারত যে কোনওসময় সামরিক অভিযান বা বড়সড় হামলা চালাতে পারে এই আশঙ্কায় পাক অধিকৃত কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিচ্ছে পাক সেনাবাহিনী। প্রতিদিন গ্রামের পর গ্রাম খালি করে দেওয়া হচ্ছে।
[‘নোট বাতিলের ১ ঘণ্টা আগে পিএনবিতে ৯০ কোটি টাকা জমা দেন নীরব’]
অন্যদিকে, এপারেও ভারতীয় সেনাবাহিনী উরি, তাংধর-সহ একাধিক সেক্টরের আশপাশে থাকা সব গ্রাম খালি করে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয় শিবিরে বা বাঙ্কারের তলায় নিয়ে যাচ্ছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি দেখে আরেকটা কারগিল যুদ্ধের অশনি সংকেত দেখতে পাচ্ছেন বাসিন্দারা। পাক দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, ডন নিউজ সীমান্তে যুদ্ধ পরিস্থিতির কথা জানিয়েছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী ফারুক রাজা হায়দর স্থানীয় জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, সংকটজনক পরিস্থিতির জন্য প্রশাসন, দমকল, হাসপাতাল সবাই যেন প্রস্তুত থাকে। তাঁর দাবি, ‘ভারতীয় সেনারা আজাদ কাশ্মীরের অসামরিক পরিকাঠামো ও সাধারণ মানুষের উপর লাগাতার গোলাবর্ষণ করছে। এতে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতিও। কারণ ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে ভারতীয় সেনাদের গোলাগুলি বর্ষণ ব্যাপক বেড়ে গিয়েছে। এক সপ্তাহ আগেই আমরা বহু মৃতদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গণকবর দিয়েছি। তাই যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকার ও প্রশাসনকে তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’
পালটা ভারতীয় সেনাবাহিনী অভিযোগ করেছে, ‘কাপুরুষ অদক্ষ দুর্বল’ পাক সেনারা ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারছে না। তাই ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে ভারতের নিরীহ গ্রামবাসী ও অসামরিক লোকজনদের টার্গেট করে নিজেদের বীরত্ব জাহির করছে। উপত্যকার ব্রিগেডিয়ার ওয়াই এস আলাওয়াত বলেছেন, ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে উরি সেক্টরে লাগাতার লঙ্ঘন করছে পাক সেনা। দিনে-রাতে মর্টার হামলা চালিয়ে গরিব মানুষদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করছে। নিরীহ অসামরিক লোকজনের উপর গোলাগুলি ছুড়ছে। তাই কয়েকটি নির্মীয়মাণ বাঙ্কার ছাড়াও উরির একটি স্কুল বাড়িতে গ্রামবাসীদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে তাঁদের পর্যাপ্ত কম্বল, ওষুধ, খাবার ও জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১০ মাসে পাক গোলায় রাজৌরিতে ৬ জন সাধারণ মানুষ নিহত ১৩ জন জখম হয়েছেন। ১৬৯টি বাড়ি, ১২টি সরকারি ভবনের ক্ষতি হয়েছে। ৪৬০০ বাসিন্দাকে পাকাপাকিভাবে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৮০টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই পাকিস্তানকে সময় সুযোগ পেলেই পালটা হামলা চালিয়ে যোগ্য জবাব দেওয়া হচ্ছে। ওদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। কিন্তু যে হারে বাসিন্দাদের সরানো হচ্ছে তা কি যুদ্ধ প্রস্তুতির অঙ্গ? অর্থাৎ, ফের সংঘর্ষ বাধতে পারে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে? জবাবে সদুত্তর মেলেনি কোন পক্ষের কাছ থেকেই। দু দেশের সেনা কর্তৃপক্ষই এড়িয়ে গিয়েছেন সংবাদমাধ্যমের এই প্রশ্ন। রবিবারও দু’টি পৃথক ঘটনায় জঙ্গিদের গুলিতে দুই পুলিশকর্মীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। কাশ্মীর আর্ম পুলিশের কনস্টেবল কুলতার সিংকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি করা হলে মৃত্যু হয়। অপর ঘটনাটিতে শহিদ হন কনস্টেবল ফারুখ আহমেদ।
[প্রাণ থাকতে অযোধ্যায় মসজিদের দাবি থেকে সরব না, হুঁশিয়ারি ওয়েইসির]
এদিকে, সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগে আমির জুবের সিদ্দিকির বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের দ্বারস্থ হল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিস দাবি করে বলেছে, পাক কূটনীতিক জুবের ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গিদের মাধ্যমে দক্ষিণ ভারতে ইজরায়েল ও মার্কিন কনস্যুলেটগুলিতে বড়সড় বিস্ফোরণের ছক কষে। জুবের কলম্বোর পাক হাই কমিশনে কাজ করত। এখন গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে।
The post জঙ্গিদের গুলিতে শহিদ দুই পুলিশকর্মী, নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধের আতঙ্ক appeared first on Sangbad Pratidin.