সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'নতুন' বাংলাদেশে চরম নিপীড়নের শিকার সংখ্যালঘু হিন্দুরা। হামলা চালিয়ে ভাঙা হয়েছে শতাধিক মন্দির। যত দিন যাচ্ছে দাপাদাপি বাড়ছে মৌলবাদীদের। দাঁত-নখ বের করছে একাধিক জেহাদি সংগঠন। বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা (এবিপিএস)-র বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন আরএসএসের নেতৃত্বরা। হিন্দু নির্যাতন নিয়ে প্রস্তাবও পাশ করা হয়। যেখানে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপও চাওয়া হয়েছে।

গত ২১ মার্চ (শুক্রবার) থেকে বেঙ্গালুরুতে এবিপিএসের বৈঠক শুরু হয়েছে। চলবে রবিবার পর্যন্ত। প্রসঙ্গত, আরএসএসের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণ করে এই অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা। এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত। রয়েছেন অন্যান্য নেতারাও। গতকাল এই আলোচনা সভায় উঠে আসে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গ। যা একটি প্রস্তাব পাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশে ইসলামিক চরমপন্থা ব্যাপক হারে মাথাচারা দিয়েছে। যার জন্য হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুরা হিংসা, অত্যাচার, অবিচারের শিকার হচ্ছেন। অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। যেভাবে বিভিন্ন মঠ, মন্দির, দুর্গাপুজোর প্যান্ডেলে হামলার ঘটনা ঘটছে, গণহত্যা, মেয়ের উপর নির্যাতন, ধর্ষণ, ডাকাতি বাড়ছে তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।'
শেখ হাসিনার আমলে ওপার বাংলা ছিল 'ভারতবন্ধু'। কিন্তু মহম্মদ ইউনুসের 'বদলে'র বাংলাদেশে এই সংজ্ঞাই বদলে গিয়েছে। ঢাকা এখন মজে 'পাক প্রেমে'। এই পরিস্থিতিতে মৌলবাদীদের ও ইসলামী সংগঠনগুলো বাড়বাড়ন্তে পাকিস্তানেরই ষড়যন্ত্র দেখছে আরএসএস। ইসলামাবাদের মদতেই বাংলাদেশে বিপন্ন হিন্দুরা। এনিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রস্তাবটিতে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করুন। এবং হিংসাত্মক কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দিন।'
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ঢাকার উপর চাপ বাড়িয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছিলেন, “আমরা বারবার উল্লেখ করেছি হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দায়িত্ব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের। আমি ফের একবার এই বিষয়ের উপর জোর দেব। একই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি ও ধর্মীয়স্থানগুলোরও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকেই। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে এবছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৩৭৪টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের মামলা দায়ের হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশের পুলিশ ১২৫৪টি ঘটনা খতিয়ে দেখেছে। আর এই ঘটনাগুলোকে রাজনৈতিক মোড়ক দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। খুন, অগ্নি সংযোগ, হিংসার ঘটনাকে রাজনৈতিক রঙ না দিয়ে যথাযথ তদন্ত করুন।” কিন্তু এর কোনও কিছুরই প্রভাব পড়ছে না ইউনুস সরকারের উপর। এখনও সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে তেমন কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে।