shono
Advertisement

চন্দ্রযানের সাফল্যের কৃতিত্ব নিতে আসরে মোদি! দাবি বিরোধীদের, নেহরুকে টানছে কংগ্রেস

চন্দ্রযানের সাফল্যকে গৈরিকিকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে, অভিযোগ বিরোধীরা।
Posted: 10:10 AM Aug 24, 2023Updated: 10:10 AM Aug 24, 2023

শীর্ষেন্দু চক্রবর্তী: চাঁদকে মুঠোয় আনায় কৃতিত্ব কার? বুধ-সন্ধ্যায় এই প্রশ্নই যেন ছাপিয়ে গেল সব কিছুকে। বিরোধীদের অভিযোগ, সব সাফল্যের কৃতিত্ব ৫৬ ইঞ্চির বুকপকেটে ভরার চেষ্টা করছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি (Narendra Modi)। তাঁরা পালটা কুর্নিশ জানালেন ইসরোর বিজ্ঞানীদের। তাঁদের নিষ্ঠাকে। দিনরাত এক করা পরিশ্রমকে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi), মনে করিয়ে দিলেন ইসরোর চন্দ্রাভিযানের লড়াইয়ের ইতিহাস। দেশের বিজ্ঞান সাধকদের লড়াইকে।

Advertisement

চন্দ্রযান তখন চাঁদ থেকে মাত্র ১৩৫ মিটার দূরে। ইসরোর কন্ট্রোল রুম থেকে চন্দ্রযান ৩-এর চাঁদে অবতরণের সরাসরি সম্প্রচার চলছিল। হঠাৎ দেখা গেল, সেই স্ক্রিনে চন্দ্রযানের জন্য পরিসর ছোট হয়ে গিয়েছে। কারণ, দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ থেকে ইসরো কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে জুড়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। প্রধানমন্ত্রী দফতরের যুক্তি, ওটা ছিল ভারতের গর্বের মুহূর্ত। মোদি সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যেভাবে সফট ল্যান্ডিংয়ের সময়ে প্রধানমন্ত্রীকে অর্ধেক স্ক্রিন জুড়ে দেখানো হয়েছে তা নিয়ে ঘরোয়াভাবে অনেকেই অসন্তোষ জানাতে শুরু করেছেন। শুধু তা নয়, সফট ল্যান্ডিংয়ের পর বিক্রম ল্যান্ডার চাঁদে নেমে কী করছে, তা দেখানোর পরিবর্তে ওই লাইভ সম্প্রচারে দ্রুত শুরু হয়ে যায় প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশে ভাষণ। এখানেই বিরোধীদের অভিযোগ, সম্পূর্ণ আত্মপ্রচার ছাড়া এ আর কিছু নয়।

[আরও পড়ুন: চন্দ্রযান-৩ মিশনে সঙ্গে যুক্ত বসিরহাটের ভূমিপুত্র, ছেলের কৃতিত্বে গর্বিত পরিবার]

চন্দ্রযানের চাঁদে অবতরণকে মোদি সরকার তাদের কৃতিত্ব বলে দাবি করতে শুরু করবে, এই আশঙ্কা বিরোধীদের ছিলই। বিকেলেই মমতা বলেন, কৃতিত্ব আর কারও নয়, তা শুধু বিজ্ঞানীদের। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনন্দন জানিয়েছেন ইসরোকে। কংগ্রেস (Congress) স্মরণ করাতে চেয়েছে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে। রাহুলদের কথায়, নেহরু মহাকাশ গবেষণার যে বৃহত্তর স্বপ্ন দেখেছিলেন, চন্দ্রযানের চাঁদে অবতরণের মধ্য দিয়ে তা একটা মাইলফলক ছুঁল। আগামী দিনে ভারতের মহাকাশ গবেষণা নতুন উচ্চতা নেবে। বিরোধীদের আশঙ্কা, ইসরোর এই সাফল্যের সঙ্গে জাতীয়তাবাদের বিষয়টি যেহেতু মিশে রয়েছে, তাই এর ভরপুর ফায়দা নিতে চাইছে বিজেপি তথা মোদি সরকার।

[আরও পড়ুন: ছাদে জল পড়া নিয়ে বিবাদ, ছোট ভাইকে মুগুর দিয়ে পিটিয়ে খুন দাদার]

বিরোধীদের এই আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা এ দিন মোদির ভূমিকাতেই স্পষ্ট। এ বছরের ৫ বিধানসভা দখলের লড়াইয়ে বিজেপি চন্দ্রযান ৩-এর (Chandrayan-3) সাফল্যকে হাতিয়ার করার চেষ্টা করবে বলেই মনে করছে বিরোধীরা। সে কারণে দেশজুড়ে একটা ঐক্য-সংহতি ও জাতীয়তাবাদী হাওয়া তুলে দেওয়া হয়েছে সকলের অজ্ঞাতসারে। ভিতরে ভিতরে দেশবাসী যেন ফুটছে। বহু জায়গায় বিভিন্ন ধর্ম, ভাষাভাষী, সংস্কৃতির মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রার্থনায় যোগ দেন সকাল থেকে। গঙ্গাতীরে হৃষীকেশের পরমার্থ ঘাটে গঙ্গা আরতি থেকে আমেরিকায় বিশেষ যজ্ঞ, হোম, পুজোপাঠ চলে। স্কুলবাচ্চাদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বড় পর্দায় অবতরণ সরাসরি দেখানোর আয়োজন করা হয়েছে। গোটা দেশকে বিজেপি শোনানোর চেষ্টা করে, গর্বের সঙ্গে বলো আমি ভারতবাসী (হিন্দু)। আর সে কারণেই দুরূহ আঙ্কিক এবং বৈজ্ঞানিক এক কর্মকাণ্ডেও ঈশ্বরের আশীর্বাদ প্রার্থনার নেশা ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয় দেশে এবং বিদেশেও।ইসরোর বিজ্ঞানীদের দিন-রাতের পরিশ্রমকে গেরুয়া পতাকায় মোড়ার বিজেপির এই কৌশলের বিরুদ্ধেই সুর চড়িয়েছে বিরোধী ইন্ডিয়া জোট।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement