সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেট্রল-ডিজেলের (Petrol-Diesel) উপর শুল্ক কমানোর পরই ফের বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে নিশানা করলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী (Hardeep Singh Puri)। নির্মলার ঘোষণার পরপরই তিনি টুইট করে বলে দিলেন, আমি একটা বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। কেন্দ্র সরকার দু’দফা শুল্ক কমানোর পরও মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, বাংলা, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, কেরলের মতো রাজ্যগুলিতে পেট্রল-ডিজেলের দাম বিজেপি (BJP) শাসিত রাজ্যগুলির থেকে ১০-১২ টাকা করে বেশি। আর এটা হচ্ছে রাজ্য সরকারগুলি ভ্যাট কমাতে রাজি না হওয়ায়। এবার সময় এসে গিয়েছে। এদের ঘুম ভাঙা উচিত। এই রাজ্যগুলিরও উচিত ভ্যাট কমানো।
পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর এই টুইটের পরই অবশ্য তাঁর উল্লিখিত দুই রাজ্য পেট্রল-ডিজেলে ভ্যাট কমিয়ে দিয়েছে। দেশের একমাত্র বাম শাসিত রাজ্য কেরল (Kerala) দুই জ্বালানি তেলের উপর যথাক্রমে ২.৪১ টাকা এবং ১.৩৬ টাকা কর কমিয়েছে। একই পথে হেঁটেছে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানও। রাজস্থানে (Rajasthan) লিটারপ্রতি পেট্রলে ভ্যাট কমানো হয়েছে ২ টাকা ৪৮ পয়সা। ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি কমেছে ১ টাকা ১৬ পয়সা। বাকি বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি অবশ্য এখনও কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।
[আরও পড়ুন: ‘আমাদের কাছে মানুষই সব’, জ্বালানির দাম কমার পরই টুইট মোদির]
যদিও কেন্দ্রের এই শুল্ক কমানোতে সন্তুষ্ট নয় বিরোধী শিবির। তাঁদের বক্তব্য জনরোষের ভয়ে সামান্য স্বস্তি দিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার এদিন বলেন, “সম্প্রতি দলের বৈঠকে মোদির কাছে দরবার করেন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা। এভাবে চললে ভোট পাওয়া যাবে না, জানেন নিশ্চয়ই। তাতেই তড়িঘড়ি মোদির নির্দেশে শুল্ক কমানো হল। এখানে রাজ্যের কোনও ভূমিকাই নেই। কেন্দ্র কখনও বলে, তারা দাম নিয়ন্ত্রণ করে না। আবার ভোটের আগে জাদুবলে দাম বাড়ে না। এখন ৭-৮ টাকা কমালেও, দাম বেড়েছে কতখানি? আগে ৩০-৪০ টাকা বাড়িয়ে এখন সামান্য কমিয়ে দেখাচ্ছে।” কংগ্রেস (Congress) মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা টুইটারে লেখেন, ‘কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, আজ পেট্রলের দাম ১০৫.৪১ টাকা। আপনি বলছেন, প্রতি লিটার পেট্রলের দাম ৯.৫০ টাকা কমবে। আজ থেকে ৬০ দিন আগে অর্থাৎ ২০২২-এর ২১ মার্চ, প্রতি লিটার পেট্রলের দাম ছিল ৯৫.৪১ টাকা। এই ৬০ দিনে পেট্রলের দাম প্রতি লিটারে ১০ টাকা বাড়িয়েছেন। আর এখন প্রতি লিটার পেট্রলে সাড়ে ৯ টাকা কমিয়ে দিচ্ছেন! সাধারণ মানুষকে বোকা বানানো বন্ধ করুন।’
[আরও পড়ুন: ভোট মিটতেই বহু নাগরিকের রেশন কার্ড বাতিল যোগীরাজ্যে! সরকারি ফরমানে আতঙ্ক]
সিপিএমের (CPIM) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, প্রাথমিকভাবে নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল। সামান্য হলেও, দাম কমায় কিছুটা সুরাহা হবে। কিন্তু সেটা অতি সামান্যই। কারণ গত কয়েক বছরে, বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর পেট্রোল-ডিজেলের উপর শুল্কের হার ৩০-৪০ টাকা বেড়েছে। তার উপর সেস-এর বিষয়টি পুরোপুরি ওদের হাতে। এমন করে রেখেছে যে পুরোটাই কেন্দ্রের প্রাপ্য। রাজ্যের কিছু নেই। তাই ৭-৮ টাকা দাম কমানো তেমন কিছু নয়।’