সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হরিয়ানার সিরসায় ডেরা সাচা সওদার সদর দপ্তর ঢুকল সেনা। ডেরা ক্যাম্পাস থেকে স্বঘোষিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিং ইনসানের সমস্ত সমর্থককে বের করে তল্লাট ফাঁকা করে দিল সেনা। শুক্রবারই পঞ্চকুলায় বিশেষ সিবিআই আদালত শিষ্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ‘গডম্যান’ রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তারপর থেকেই হরিয়ানা ও পাঞ্জাব-সহ প্রায় গোটা উত্তর ভারতেই তাণ্ডব চালাচ্ছে ডেরার সদস্য ও সমর্থকরা। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ হরিয়ানাতে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানিয়েছেন। সোমবার ধর্ষক বাবার শাস্তি ঘোষণার দিন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারপতিকে চপারে করে উড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
[রাম রহিমের কুকীর্তির বিরুদ্ধে সরব বলিউড, মতভেদ ক্রিকেটারদের মধ্যে]
সিরসায় ডেরার ক্যাম্পাসে শনিবার ফ্ল্যাগ মার্চ করে সেনা। ধর্ষক ‘বাবা’র কয়েক লক্ষ সমর্থক সেখানে ভিড় জমিয়েছিলেন। বাবার সমর্থকদের হটাতে সেনার সঙ্গে ছিল পর্যাপ্ত র্যাফ ও পুলিশকর্মী। ইতিমধ্যে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টারকে কার্যত তুলোধোনা করেছে। রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে রাজ্যে আগুন জ্বলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, এই ভাষাতে মুখ্যমন্ত্রী ভর্ৎসনা করে আদালত।
[বাবা গো বাবা! যৌন কুকীর্তিতে কম যান না এই ‘বাবা’রাও]
শনিবার পুলিশের বিরুদ্ধে দোষী রাম রহিমকে রাজকীয় খাতিরের বন্দোবস্ত করার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন হরিয়ানার ডিজি (কারা) কেপি সিং। তিনি জানিয়েছেন, রাম রহিমকে সাধারণ কারাগারেই রাখা হয়েছে। তার সেলে কোনও এসি নেই। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের অভিযোগ, ধর্ষক গডম্যানকে পুলিশের একাংশ রাজকীয় খাতির করছে। তার জন্য নাকি আলাদা চাকরবাকর, গেস্ট হাউসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে কেপি সিং জানিয়েছেন, কোনও গেস্টহাউস নয়, সুনারিয়া জেলে রাখা হয়েছে অভিযুক্ত গুরমিত সিংকে।
প্রশাসনের ভাবমূর্তি রক্ষায় হরিয়ানার মুখ্যসচিবকে এদিন বাধ্য হয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডাকতে হয়। মুখ্যসচিবও মন্তব্য করেন, ‘আর পাঁচটা সাধারণ আসামীর মতোই রাম রহিম সিংকে সাধারণ জেলে রাখা হয়েছে, সাদামাটা খাবার দেওয়া হয়েছে।’ মুখ্যসচিব আরও জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার হতেই ‘বাবা’র জেড প্লাস সিকিউরিটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তাঁর সাফাই, অভিযুক্তকে হেলিকপ্টারে করে জেলে আনা হয়েছে শুধুমাত্র নিরাপত্তাজনিত কারণে। তবে আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও এখনও কেন গডম্যানের সম্পত্তি ‘অ্যাটাচ’ করা হয়নি সেই বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
সবমিলিয়ে পঞ্চকুলায় এখন ১২ কলাম সেনা, সিরসায় ৮ কলাম, মিনাসা ও মানকোটে ২ কলাম করে সেনা মোতায়েন রয়েছে। ডেরা সংগঠনের ৩৬টি আশ্রম ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। সিরসায় ডেরায় সদর দপ্তর খালি করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হরিয়ানা বিজেপির প্রধান অনিল জৈন। অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল সত্যপাল সিং জানিয়েছেন, হিংসাত্মক পরিস্থিতির জেরে হরিয়ানায় এখনও পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধু পঞ্চকুলাতেই মারা গিয়েছেন ২৮ জন। এত বড় অশান্তিতে কেন্দ্র ও বিজেপির মুখ পুড়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে অমিত শাহ দলীয় সমর্থকদের নিয়ে বৈঠক করেন। তবে যা পরিস্থিতি এখনই সম্ভবত মনোহর লাল খট্টরের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করছে না বিজেপি।
The post রাম রহিম কাণ্ড: অগ্নিগর্ভ হরিয়ানায় রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি appeared first on Sangbad Pratidin.