সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে ভারত। ১ মের মধ্যে সমস্ত পাকিস্তানিকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। এই নির্দেশিকার জেরে বিপাকে পড়েছেন প্রেমের টানে ভারতে এসে সংসার পাতা সীমা হায়দার। ‘পাকবধূ’র বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সন্ত্রাস দমন শাখা (এটিএস)। পাকিস্তানি হামলায় পহেলগাঁও কাণ্ডে যোগাযোগ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে সীমাকেও। কিন্তু তাঁর আইনজীবী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সীমা সনাতন ধর্ম গ্রহণ করেছেন এবং ভারতীয় যুবক শচীন মিনারকে বিয়ে করেছেন। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় তাঁর কোনও যোগ নেই।
বর্তমানে সন্তানদের নিয়ে গ্রেটার নয়ডাতে থাকেন সীমা আর শচীন। তাদের ভারতী মিনার। 'পাকবধূ'র আইনজীবী এপি সিং জানান, "সীমার মেয়ে অসুস্থ। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। এই সংবেদনশীল পরিস্থিতির তাঁর সমবেদনা রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের এটিএস দল এবং অন্যান্য সরকারি সংস্থা সীমার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি তদন্তকারীদের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।" তিনি আরও জানান যে পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে সীমার কোনও যোগ নেই।
প্রেমের টানে দু’বছর আগে পাকিস্তান থেকে চার সন্তানকে নিয়ে নেপাল সীমান্ত হয়ে অবৈধভাবে ভারতে এসেছিলেন সীমা। বিয়ে করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের শচীন মিনারকে। তখন থেকেই নানা কারণে শিরোনামে পাকবধূ সীমা। নানা আইনি টানাপোড়েনের মাঝেও এদেশে সুখেই সংসার করছিলেন তিনি। কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তবে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে নৃশংস জঙ্গি হামলার ঘটনায় সব হিসেব ওলট পালট হয়ে গিয়েছে সীমার সংসারে। ভারত ছাড়ার আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে তাঁকে। তাই তো কয়েকদিন আগে সোশাল মিডিয়ায় মোদি সরকারের উদ্দেশে সীমার আর্জি জানান, ‘আমি পাকিস্তানের মেয়ে ছিলাম, কিন্তু এখন ভারতের পুত্রবধূ। দয়া করে আমাকে আর ওখানে ফেরত পাঠাবেন না।’
শেষ পর্যন্ত সীমার ভাগ্যে কী রয়েছে তা জানতে আগ্রহী ছিলেন সকলেই। কয়েকদিন আগেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের এক সূত্র মারফৎ জানা যায়, এখনই সীমা হায়দারকে পাকিস্তানে ফের পাঠাচ্ছে না কেন্দ্র। যে পাকিস্তানিদের ভারত ছাড়তে হবে আপাতত সেই তালিকায় সীমা পড়ছেন না। জানা গিয়েছে, কোর্টে সীমার আইনজীবীরা দাবি করেছেন, তিনি আর পাকিস্তানের নাগরিক নন। কারণ তিনি ভারতীয় নাগরিকের স্ত্রী। স্বামীর নাগরিকত্বের উপরই এখন তাঁর নাগরিকত্ব নির্ভর করছে। এছাড়া সীমার সন্তান ভারতে জন্ম নিয়েছে। প্রশাসনের তরফে বাচ্চাটিকে যে বার্থ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে সেখানে লেখা রয়েছে মা সীমা এবং শচীন মীনার পিতা।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সব রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন, পাকিস্তানিদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানোর জন্য। এরপরই তৎপরতা বেড়েছে উত্তরপ্রদেশে। একজন ছাড়া সকল পাকিস্তানি নাগরিককে ইতিমধ্যেই রাজ্য থেকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ব্যক্তিগতভাবে প্রক্রিয়াটির তদারকি করছেন। একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
