বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: SIR-এ বাংলায় বাদ যাবে কোটির বেশি মানুষের নাম। কারণ রাজ্য নাকি 'অনুপ্রবেশকারী'তে ছেয়ে গিয়েছে। ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া শুরুর আগে এমনটাই দাবি করেছিল বিজেপি। কিঞ্চিৎ নরম ভাবে হলেও সেই সুরে সুর মেলায় বামেরা। কিন্তু বাংলার পর কেরল ও কয়েকটি বিজেপি শাসিত রাজ্যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হতেই অন্য ছবি ধরা পড়ছে। দেখা যাচ্ছে, বাংলার তুলনায় শতাংশের বিচারে বামশাসিত কেরল বা বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাদ পড়া ভোটারের সংখ্যা বেশি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে এই রাজ্যগুলিতেও কি ভুয়ো ভোটারই পুঁজি ছিল শাসকদলের?
বামশাসিত কেরল, বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে মঙ্গলবার। কেরলের খসড়া তালিকায় নাম বাদ গিয়েছে, ২৪ লক্ষ। যা কিনা দক্ষিণের রাজ্যটির মোট ভোটারের তুলনায় ৮.৬৫ শতাংশ। বাংলায় বাদ গিয়েছিল ৭.৫৭ শতাংশ। বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে খসড়া তালিকায় বাদ গিয়েছে প্রায় ৪২ লক্ষ ৭৪ হাজার ভোটার। বিজেপি শাসিত ছত্তিশগড়ে বাদ পড়েছে ২৩ লক্ষ ৬৪ হাজার ভোটার। যা শতকরা হিসাবে প্রায় ১৩ শতাংশ। তাৎপর্যপূর্ণভাবে মধ্যপ্রদেশে স্থানান্তরিত বা নিখোঁজ ভোটারের সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশ। একই রকম ছবি ছত্তিশগড়েও। এর আগে বিজেপি শাসিত গুজরাটেও একইরকম ছবি দেখা গিয়েছে।
খসড়া তালিকা প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, বাংলায় SIR শুরুর আগে যারা হম্বিতম্বি করছিল, সেই বিজেপি এবং বামেদের নিজেদের হাতে থাকা রাজ্যেও প্রায় সমহারে বা বেশিহারে ভোটারের নাম বাদ যাচ্ছে। এখন প্রশ্ন হল, বাদ পড়া এই ভোটারের সংখ্যাটা যদি ভুয়ো ভোটার বা অনুপ্রবেশকারী ভোটার সংখ্যার পরিমাপক হয়, তাহলে বাংলার চেয়ে এই রাজ্যগুলিতেও পরিস্থিতি একই। আর যদি এই বাদ পড়া সংখ্যাটা স্বাভাবিক হয়, তাহলে বাংলার সংখ্যাটাও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে অমিত শাহ থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারীরা যে বারবার অনুপ্রবেশের কথা বলছেন, সেই অনুপ্রবেশকারীরা গেল কোথায়?
বিজেপির অবশ্য একটা যুক্তি আছে। গেরুয়া শিবির বলতেই পারে, আপাতত শুধু খসড়া তালিকা প্রকাশ হয়েছে। মূল তালিকা এখনও বাকি। তাতে খেলা অনেকটা ঘুরে যেতে পারে।
