সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই দেশজুড়ে বিশাল সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নামছে কংগ্রেস (Congress)। আগামী ১ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে আগামী বছর ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলবে। তফসিলি জাতি, উপজাতির ভোটারদের বিশেষভাবে টার্গেট করা হবে এই সদস্য সংগ্রহ অভিযানে। প্রথম ভোটারদের জন্যও আলাদা কৌশল তৈরি করছে হাত শিবির।
পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের প্রস্তুতি সারতে মঙ্গলবার দিল্লিতে দলের সাধারণ সম্পাদক, এআইসিসির পর্যবেক্ষক এবং দলের বিভিন্ন স্তরের পদাধিকারীদের নিয়ে বৈঠক করেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। সেখানেই ঠিক হয়, ১ নভেম্বর থেকে দেশজুড়ে বিশাল সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হবে। দেশের প্রতিটি প্রান্তে, প্রতিটি কোণে কংগ্রেস কর্মীরা যাবেন। এই সদস্য সংগ্রহ অভিযানে প্রথমবার ভোটার হওয়া তরুণদের বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে চায় দল। সেই সঙ্গে মিশন মোডে মহিলা ভোটারদের টার্গেট করতে চাইছে কংগ্রেস (Congress)। যদিও কংগ্রেস সূত্রের খবর, দলের সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সংখ্যার থেকে সদস্যদের কাজের মানকে বেশি গুরুত্ব দিতে চান প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
[আরও পড়ুন: ‘আমরা শুধু নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছি’, কংগ্রেসের ‘বিরোধিতা’ প্রসঙ্গে সাফাই তৃণমূলের]
দলের কর্মী-সমর্থকদের বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং ওবিসি ভোটারদের বিশেষভাবে টার্গেট করতে। কংগ্রেস কর্মীরা এসসি, এসটি এবং দলে টানতে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন, তাঁদের এলাকায় যাবেন, এমনকী ভোটারদের বাড়িতেও যাবেন। তফসিলি জাতি, উপজাতিদের জন্য এতদিন কংগ্রেস কী কী করেছে, তাঁদের সমস্যা কী, কংগ্রেসের ভিশন কী, বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবটাই বোঝাবেন কর্মীরা। অনেকটা বিজেপির গৃহ সম্পর্ক অভিযানের ধাঁচেই চলবে কংগ্রেসের এই সদস্য সংগ্রহ অভিযান।
[আরও পড়ুন: গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রাক্তন রাজ্যপালের, ইস্তফার দাবিতে সরব TMC]
দলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সোনিয়া গান্ধী জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি-আরএসএসের (BJP-RSS) বিভাজনমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে নির্ভীকভাবে লড়াই করতে হবে। সেজন্য দলের নেতাদের জন্য আলাদা প্রশিক্ষণ শিবির খোলা হবে। সেই সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের বলে দেওয়া হয়েছে তৃণমূলস্তরের আন্দোলনই আগামী দিনে দলের শক্তিবৃদ্ধির একমাত্র রাস্তা। কৃষকদের উপর অত্যাচার থেকে শুরু করে বেহাল অর্থনীতি, সব ক্ষেত্রেই তৃণমূল স্তরে নেমে আন্দোলনকেই রাস্তা বলে মনে করছে হাত শিবির। এক্ষেত্রে উঠে এসেছে লখিমপুর খেরির ঘটনা। লখিমপুরের ঘটনায় পথে নেমে আন্দোলন করার সুফল দল পেয়েছে বলেই মনে করছে দলের হাইকম্যান্ড। আগামী দিনে মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবাদে জন জাগরণ অভিযান নামের বিশেষ কর্মসূচির কোথাও ঘোষণা করেছে হাত শিবির।
তবে, দলের রাজ্যস্তরের নেতাদের মধ্যে যে সমন্বয় এবং ঐক্যের অভাব রয়েছে, সেটা একপ্রকার স্বীকার করে নিয়েছেন দলের শীর্ষনেতারা। সূত্রের খবর, হাই কম্যান্ডের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অবিলম্বে নিজেদের মধ্যে বিবাদ মিটিয়ে ফেলে বিজেপির বিরুদ্ধে পথে নামতে হবে।