সুব্রত বিশ্বাস: ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে একেবারে নিয়ম করে যোগশিক্ষা। হাতমুখ ধুয়ে টিফিন। এরপর খাতা-পেন্সিল নিয়ে বসে পড়তে হচ্ছে চেয়ার-টেবিলে। লিখতে হচ্ছে এক মহামারির পঙ্কিল অভিজ্ঞতার কাহিনী। লকডাউনের জেরে স্টেশনে থমকে থাকা জীবনের অভিজ্ঞতাকে এভাবেই লিপিবদ্ধ করতে হচ্ছে বারাণসী স্টেশনে আটকে পড়া ৫০ জন যাত্রীকে। তামিলনাড়ু, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটকবাসী আটকে পড়া যাত্রীদের বেশিরভাগই এসেছিলেন বাবা বিশ্বনাথ দর্শনে। কেউবা অন্য কোনও কাজে। করনার জেরে লকডাউন লগু হওয়ায় ফিরতে পারেননি নিজেদের রাজ্যে। শিবধাম এখন আর ভালও লাগছে না তাঁদের কাছে। যে কোনও উপায়ে ফিরতে চান বাড়ি।
[আরও পড়ুন: লকডাউনের জেরে পেশা বদলের হিড়িক, যাদুছড়ি ছেড়ে সবজি বেচছেন যাদুকর]
এদিকে, নিরুপায় রেল কর্তৃপক্ষ। তবুও নিয়ম করে স্টেশনে আটকে পড়া পঞ্চাশ জন যাত্রীর মুখে খাবার তুলে দিচ্ছ তারা। লকডাউন দীর্ঘায়িত হতেই মানুষজন ভেঙে পড়ছেন মানসিকভাবে। স্টেশনে কাটছে দীর্ঘ সময়। যাত্রী আবাসে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে অনেককে। দূরত্ব মেনে বাধ্য হয়ে থাকছেন সবাই। তরুণ থেকে বৃদ্ধ সবাইকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে নানা ধরনের পাঠ দিচ্ছেন রেলকর্তারা। তাদের অভিজ্ঞতা লিখিয়ে রাখছে রেল। দিন ফিরলে এই অভিজ্ঞাতার সমাহার কে মালাট বন্দি করার পরিকল্পনা নিয়েছে রেল। স্টেশন ম্যানেজার আনন্দমোহন বলেন, “দৈনিক ২২০টি ট্রেন, লক্ষাধিক যাত্রীর ব্যস্ততা থাকে। যা আজ নেই। তাই আটকে পড়া পঞ্চাশ যাত্রীর জন্য আমরা তৎপর রয়েছি। খাওয়া-দাওয়া, যোগা, স্যানিটাইজার, মাস্ক দেওয়া থেকে শুরু করে দূরত্ব বজায় রাখা সবদিকে নজর দিতে হচ্ছে আমাদের। দুঃসময়ে আটকে পাড়ার অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করতে প্রত্যেককে পেন্সিল, খাতা দেওয়া হয়েছে। এ এক নিদারুণ সময়, প্রত্যেকে নিজের মতো করে তা লিপিবদ্ধ করছেন। আমরা সেগুলি সংগ্রহে রাখবো।”
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের হামলা ঠেকাতে দেশজুড়ে চলা লকডাউনের জেরে বন্ধ গণপরিবহণ। ফলে বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়েছেন বহু যাত্রী। তাঁদের খাবার জোগান দেওয়া থেকে শুরু করে মানসিক অবসাদ পর্যন্ত একাধিক সমস্যার সমাধান করতে হচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষকে।
[আরও পড়ুন: করোনায় বিপর্যস্ত মিউচুয়াল ফান্ড, ৫০ হাজার কোটির নগদ জোগান দেবে RBI]
The post মহামারির দিনলিপি, স্টেশনে আটকে পড়া যাত্রীরা লিখছেন দুঃসময়ের অভিজ্ঞতা appeared first on Sangbad Pratidin.
