সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যোগীরাজ্যে মিরাটের একটি টোল প্লাজায় জওয়ান কপিল সিংকে হেনস্তা ও মারধরের ঘটনায় তোলপাড় হয়েছে গোটা দেশ। জওয়ানকে হেনস্তা করার অভিযোগে ওই টোল প্লাজার এজেন্সিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। নিগৃহীত সেনার কাছে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি ২০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে এনএইচএআই(NHAI)। সংস্থার ৬ কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও এতেই সন্তুষ্ট নন জওয়ানের বাবা। তিনি ছেলের প্রতি এই দুর্বব্যহারের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে নিগৃহীত জওয়ান কপিল সিংয়ের বাবা কৃষণ পাল জানিয়েছেন, “ছুটি শেষ করে কপিল ডিউটিতে ফিরছিল। আমরা ওকে দিল্লি এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলাম। ভূনি টোল প্লাজায় পৌঁছে পর সে কর্মীদের অনুরোধ করে তাকে জলদি ছাড়তে, কারণ তাঁকে ফ্লাইট ধরতে হবে। কর্মীরা কপিলের সেনা পরিচয়পত্র ফেলে দেয় এবং খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর শুরু করে। এই দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।” কপিলের ভাই প্রদীপও এই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হন। তিনি সাফ জানাচ্ছেন, ''আমার দাদাকে ১০ থেকে ১২ জন মিলে অন্যায়ভাবে মারধর করেছে।''
ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ওই টোল প্লাজার এজেন্সিকে ২০লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে ন্যাশনাল হাইওয়েস অথরিটি অফ ইন্ডি বা NHAI। চুক্তিভঙ্গ করে ওই এজেন্সির মালিক ধরম সিংকে টোল প্লাজা থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে তাঁর সংস্থা যেন কোনও টোল প্লাজার দায়িত্ব না পায় তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে ঘটনার নিন্দা করে ভারতীয় সেনার তরফে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, 'একজন কর্মরত সেনার বিরুদ্ধে এই ধরনের ঘটনার কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে ভারতীয় সেনা। দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। খুনের চেষ্টা, বেআইনি জমায়েত এবং ডাকাতির অভিযোগে বিএএনএস-এর আওতায় ইতিমধ্যেই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এ পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি নিয়ে এনএইচএআই(NHAI)-এর কাছে প্রতিবাদও জানানো হয়েছে, যাতে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে পদক্ষেপ করা হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'
প্রসঙ্গত, ঘটনাটি ঘটেছে গত রবিবার উত্তরপ্রদেশের মিরাটের সারুরপুর থানার অন্তর্গত ভুনি টোল প্লাজায়। নির্যাতিত ওই জওয়ান জম্মু ও কাশ্মীরে কর্মরত। নিজের গ্রাম থেকে দিল্লির উদ্দেশে যাচ্ছিলেন তিনি। পথে কর্নাল জাতীয় সড়কের উপর ওই টোল প্লাজায় ব্যাপক ট্রাফিক জ্যাম ও টোল ফি নিয়ে সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। যার জেরে ওই জওয়ানকে সদলবলে আক্রমণ করে সেখানকার কর্মীরা। পিছমোড়া করে তাঁকে বেঁধে ফেলা হয় সেখানেই। এরপর শুরু হয় মার। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
