সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহিলা সুরক্ষা আইনের অপব্যবহার নিয়ে ঘোরতর উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এক খোরপোশ মামলায় শীর্ষ আদালত বলে দিল, "বিয়ে পবিত্র বন্ধন। এটাকে টাকা রোজগারের ফাঁদ হিসাবে ব্যবহার করা যায় না।" শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ইদানিং স্বামীর সমান সম্পত্তি পাওয়ার লোভে যাচ্ছেতাই খোরপোশ চাইছেন মহিলারা।
শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং পঙ্কজ মিথার ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, আমাদের দেশে নারী সুরক্ষায় যে কঠোর আইন আছে সেটা মূলত মহিলাদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য। এই আইনকে স্বামীর বিরুদ্ধে হেনস্তা, ভীতি প্রদর্শন বা তোলাবাজির উদ্দেশে ব্যবহার করা যায় না। একই সঙ্গে আদালতের বক্তব্য, খোরপোশ দেওয়া হয় মহিলাদের আর্থিক এবং সামাজিক সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য। সেটা কোনওভাবেই মহিলারা স্বামীর সমান সম্পত্তি পাওয়ার লোভে ব্যবহার করতে পারেন না। শীর্ষ আদালত পরিষ্কার বলছে, "হিন্দু শাস্ত্রমতে বিয়ে পবিত্র বন্ধন। এটাকে অর্থ রোজগারের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা উচিত নয়।"
যে মামলার ভিত্তিতে শীর্ষ আদালত এই পর্যবেক্ষণ করেছে, সেই মামলায় এক ব্যবসায়ীর কাছে ডিভোর্সের জন্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকার খোরপোশ দাবি করেছিলেন তাঁর স্ত্রী। ওই মহিলার বক্তব্য ছিল, তাঁর স্বামী দেশে বিদেশে সব মিলিয়ে ৫ হাজার কোটির সম্পত্তির মালিক। তাছাড়া আগের স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের সময় তিনি ৫০০ কোটির খোরপোশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ওই মহিলার কোনও যুক্তি মানেনি। পালটা ওই মহিলার উদ্দেশে দুই বিচারপতির প্রশ্ন, "যদি বিচ্ছেদের পর কোনও কারণে আপনার স্বামী গরিব হয়ে যান, তখনও কি আপনি তাঁর সমান সম্পত্তি চাইবেন?" সব মিলিয়ে মহিলাকে এককালীন ১২ কোটি টাকা খোরপোশ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
দিন কয়েক আগে বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অতুল সুভাষের আত্মহত্যার ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে গোটা দেশে। অতুলের বিবাহ বিচ্ছিন্ন স্ত্রী মোটা অঙ্কের খোরপোশের দাবিতে তাঁর উপর অত্যাচার চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার আবহে সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।