সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (সিএপিএফ) জওয়ানদের মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে আত্মহত্যা ও স্বেচ্ছাবসরের প্রবণতা। বুধবার সংসদে রাজ্যসভার অধিবেশনে এমনই তথ্য দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এর পিছনে টানা ডিউটি, বিনিদ্র রাত কাটানো, পরিবার থেকে দিনের পর দিন দূরে থাকার মতো কারণ রয়েছে। সমস্যার সমাধানে একাধিক মত দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক গঠিত টাস্ক ফোর্স।
সম্প্রতি অমিত শাহের মন্ত্রকের তরফে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে জানানো হয়েছে, ৭৩০ জন সিএপিএফ জওয়ান আত্মহত্যা করেছেন। ৫৫ হাজারের বেশি জওয়ানের মধ্যে কেউ কেউ পদত্যাগ করেছেন। অনেকে আবার স্বেচ্ছাবসর নিয়েছেন। শাহের মন্ত্রকের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, আত্মহত্যার কারণ 'ব্যক্তিগত'। যদিও কাজের চাপের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে।
সিএপিএফ জওয়ানদের মধ্যে আত্মহত্যার সংখ্যা বৃদ্ধির কারণেই টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছিল। সেই টাস্ক ফোর্সের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আত্মঘাতী জওয়ানদের ৮০ শতাংশ চরম সিদ্ধান্ত নেন ছুটি থেকে ফেরার পরে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, জওয়ানদের আত্মহত্যার কারণ ‘‘স্ত্রী বা পরিবারের সদস্যের মৃত্যুশোক, দাম্পত্য সম্পর্কের সমসযা বা বিবাহবিচ্ছেদ, আর্থিক সমস্যা এবং সন্তানদের শিক্ষার সুযোগের অভাব ইত্যাদি।’’
শাহের মন্ত্রক জানিয়েছে, এই সব সমস্যা থেকে উদ্ধার পেতে জওয়ানেরা যাতে পরিবারের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। এই প্রক্রিয়া শুরুও হয়ে গিয়েছে। সেই কারণে চলতি বছর ৪২,৭৯৭ জন জওয়ানকে কিছু দিনের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিতানন্দ রাই জানান, চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৬,৩০২ জন জওয়ান তাঁদের পরিবারের সঙ্গে ১০০ দিন কাটিয়েছেন। ২০২৩ ও '২২ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ৮৬৩৬ ও ৭৮৬৪ জন।
এছাড়াও আত্মহত্যা প্রবণতা কমাতে অসম রাইফেলসের জওয়ানদের কাউন্সিলিং করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের টাস্কে ফোর্সের সদস্যরা। তবে সবচেয়ে বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জওয়ানদের জন্য পর্যপ্ত ছুটি অনুমোদনের বিষয়টিকে। যাতে করে তাঁরা পরিবারের সঙ্গে 'কোয়ালিটি টাইম' কাটিয়ে মানসিক উদ্বেগ থেকে মুক্ত হতে পারেন।