সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গর্ভপাত হওয়ার পরে মহিলা বিচারককে বরখাস্ত করেছিল মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট। সেই ঘটনায় উচ্চ আদালতকে সতর্ক করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, পুরুষদের যদি ঋতুস্রাব হত, তাহলে তাঁরা বুঝতেন গোটা বিষয়টি কেমন।
পারফরম্যান্স খারাপ বলে ২০২৩ সালে ৬জন মহিলা বিচারককে বরখাস্ত করা হয় মধ্যপ্রদেশে। গত বছরের নভেম্বর মাসে সেই বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করে শীর্ষ আদালত। তার পর চলতি বছরের আগস্ট মাসে ওই তালিকায় থাকা ৪ জন মহিলা বিচারককে কাজে ফেরানো হয়। কিন্তু অদিতি কুমার শর্মা এবং সরিতা চৌধুরি নামে দুই মহিলা বিচারক চাকরি ফিরে পাননি।
বুধবার এই দুই বিচারকের মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং এন কোটিশ্বর সিংয়ের বেঞ্চে। জানা যায়, ২০১৭ সালে বিচারক হয়েছিলেন অদিতি। প্রথম দুবছর তাঁর কাজ খুবই ভালো হয়েছিল বলে রিপোর্ট দেয় মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট। কিন্তু ২০২০ সালের পর থেকে অদিতির পারফরম্যান্স ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। ১৫০০টি মামলা ঝুলে থাকে তাঁর এজলাসে। খারাপ পারফরম্যান্সের কারণ হিসাবে অদিতি জানান, ২০২১ সালে গর্ভপাত হয় তাঁর। কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর ভাইয়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে। তা সত্ত্বেও ২০২৩ সালে চাকরি থেকে অদিতিকে বরখাস্ত করা হয়।
গোটা বিষয়টিতে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টকে যথেষ্ট কড়া ভাষায় তিরস্কার করেছেন শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতি। মামলার শুনানির সময়ে বিচারপতি নাগরত্ন বলেন, "আশা করি এইভাবে পুরুষ বিচারকদেরও বিচার করা হোক। একজন মহিলা গর্ভবতী হলেন, তার পর তাঁর গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হয়ে গেল। কতখানি শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তাঁকে। যদি পুরুষদের ঋতুস্রাব হতো, তাহলে তাঁরা বুঝতে পারতেন।" শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়েছে, অদিতিকে বরখাস্ত করার আগে তাঁর যন্ত্রণার দিকটা মোটেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।