shono
Advertisement

ঘুষ দিয়ে চাকরির প্রমাণ দেখান, প্রাথমিক মামলায় বিকাশকে বলল সুপ্রিম কোর্ট, প্রশ্নের মুখে পর্ষদও

সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়া সিবিআই রিপোর্টেও দুর্নীতির উল্লেখ নেই!
Posted: 08:53 AM May 12, 2023Updated: 08:53 AM May 12, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের রিপোর্টে লেনদেনের বিষয়য়টি আসেনি। চাকরি হারানো ২৬৯ জন যে ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, উল্লেখ নেই সে কথারও। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ও বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চে বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও শুনানিতে সেই বিষয়টিই আবার উঠে এল।

Advertisement

এদিন চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে (Bikash Ranjan Bhattacharya) বিচারপতি ধুলিয়া প্রশ্ন করেন, “আপনি বারবার দুর্নীতি, দুর্নীতি বলে উল্লেখ করছেন। কিন্তু যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা এতে কীভাবে যুক্ত? সে বিষয়ে আপনার কাছে কী প্রমাণ রয়েছে? নিয়োগের ক্ষেত্রে ত্রুটি বা পদ্ধতিগত ভুল থাকতে পারে। সে কথা আমরা পর্ষদকে বারবার জিজ্ঞাসা করব।” রাজ্য সরকারের সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা পাঁচ বছর ধরে চাকরি করার পর কর্মচ্যুত হয়েছেন, তাঁরা যে ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, সিবিআই রিপোর্টে সেরকম কোনও অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে নেই। সিবিআইয়ের (CBI) কাছে একজন মহিলার বিরুদ্ধে ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ এসেছে। এই অভিযোগের পক্ষে যিনি সাক্ষী, তিনি ওই মহিলার স্বামী এবং মহিলার সঙ্গে তাঁর ডিভোর্সের মামলা চলছে। বিকাশ এদিন আদালতে বলেছেন, ৪০ হাজার নিয়োগ নিয়ে তাঁর কোনও অভিযোগ নেই। এই ২৬৯ জনকে, যাঁদের এক নম্বর দিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের সবাইকে নতুন করে নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় আসতে হবে।

[আরও পড়ুন: বাইকে চড়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে অঘটন, লরির ধাক্কায় মৃত্যু বিএড ছাত্রের]

অথচ কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে প্রশ্নপত্রে ভুল থাকার জন্য সমস্ত চাকরিপ্রার্থীকে যে ৬ নম্বর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাতে চাকরি হারানো এই ২৬৯ জন এর জন্য চাকরি পাওয়ার অধিকারী। সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিন শুনানির শেষ লগ্নে বিচারপতি ধুলিয়া বিকাশবাবুকে লক্ষ্য করে জানতে চান, “এঁরা যখন ফের চাকরিই পাবেন তাহলে পাঁচ বছর ধরে চাকরি করার পরে এঁদের কেন ‘ডিসকন্টিনিউ’ করা হবে!” কর্মচ্যুতদের বিরুদ্ধে ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ধোপে টেকাতে পারেননি বিকাশ। আদালতে মূলত এই দু’দিন ধরে সিবিআই রিপোর্ট ও পর্ষদের হলফনামা পড়া হয়েছে। পয়েন্ট অফ আর্গুমেন্ট বা সওয়াল-জবাব সেভাবে হয়নি। সিবিআই (CBI) রিপোর্টে ‘ভুল করেছে’ বা ‘ত্রুটি হয়েছে’ বলে যা উল্লেখ করা হয়েছে, সবকিছুই পর্যদের আধিকারিক স্তরের।

[আরও পড়ুন: তৃণমূলে ভাঙন, নিশীথের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ তৃণমূলের প্রধান-সহ পঞ্চায়েত সদস্যর]

সিবিআই রিপোর্টে ঘুষের বিষয়টির উল্লেখ না থাকলেও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে (WBBPE) এদিন প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিন শুনানির সময়ে বিকাশ অভিযোগের সুরে বলেন, “আমার মক্কেলরা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি পাননি। অথচ ২৬৯ জনকে অতিরিক্ত এক নম্বর দিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। কীভাবে বেছে বেছে এই ২৬৯ জনকে ঠিক করা হয়েছে?” বিকাশের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি বসু ও বিচারপতি ধুলিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী জয়দীপ গুপ্তর সামনে কয়েকটি প্রশ্ন রাখেন। বেঞ্চ জানতে চেয়েছে, ৪২ হাজার পদ খালি ছিল। পর্ষদ চল্লিশ হাজার জনের নাম কেন পাঠিয়েছিল? বাকি দু’হাজারের নাম কেন পাঠায়নি? পর্ষদ তো নিয়োগকর্তা নয়। নিয়োগ কর্তা তো রাজ্য সরকার। কেন ৪২ হাজারের নামের তালিকা দেওয়া হয়নি? কেন দু’হাজার পদ খালি রাখা হয়েছিল? এক নম্বর করে অতিরিক্ত দেওয়া হয়েছে। সেই ২৬৯ জনকে বাছা হয়েছিল কীভাবে? এক নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে আরও অনেকেই তো যোগ্য হতে পারতেন। পর্ষদ কীভাবে এদের বেছেছিল এবং এই মর্মে এসএমএস পাঠিয়েছিল, সে সম্পর্কিত কাগজপত্র জমা দিতে বলেছে শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। ওএমআর শিট পর্ষদ কেন নষ্ট করেছিল, তা-ও জানতে চাওয়া হয়। তাতে বোর্ডের আইনজীবী জানান, বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর তাঁর জানা নেই। পর্ষদের কাছ থেকে জেনে নিয়ে জানাতে পারবেন। আগামী মঙ্গলবার মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement