shono
Advertisement
Maha Kumbh

ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করা পুণ্যার্থীর সংখ্যা ৫০ কোটি পার, বিশ্বরেকর্ডের পথে মহাকুম্ভ

রেকর্ড যাচাই করতে এসে পড়েছেন গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের কর্তারাও।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 09:58 AM Feb 15, 2025Updated: 10:00 AM Feb 15, 2025

সন্দীপ চক্রবর্তী, প্রয়াগরাজ: একটি ছোট্ট মেয়ে বাবার হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতেই বলছে, ‘অর কিতনা দূর পাপা। মুঝে গোদ মে লো।’ বাচ্চাটির নাম বোঝা গেল, সবিতা। পাশেই এক বৃদ্ধার হাত মাফলারে বেঁধে নিয়ে চলেছেন তাঁর মেয়ে। পরনের শাড়ি দেখে বোঝা যায়, রাজস্থানি। অন্যদিকে শ’খানেক সাফাইকর্মী কেল্লার কাছ থেকে রাস্তা জুড়ে পরিষ্কার করতে ব্যস্ত। ওদের গায়ে কোম্পানির নাম লেখা পোশাক। কাছেই বিরাট তোরণ ওই সংস্থারই। একটু হাঁটলে সঙ্গম ঘাটের পাশে নিজেদের আশ্রমের নাম প্রচারে লেগে পড়েছেন জনা কুড়ি। বিলিয়ে দিচ্ছেন লিফলেট। প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে গেলে এমনই নানা দৃশ্য চোখে পড়বে। ইতিমধ্যে ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করা পুণ্যার্থীর সংখ্যা ৫০ কোটি পেরিয়ে গিয়েছে। বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পথে মহাকুম্ভ। 

Advertisement

এবারে ১৪৪ বছরের পুণ্যতিথিতে আয়োজিত হয়েছে এই মহাকুম্ভ। শনি, রবি, বৃহস্পতির অবস্থানের উপর ভিত্তি করে এই তারিখ তৈরি হয়। রেকর্ড যাচাই করতে এসে পড়েছেন গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের কর্তারাও। প্রশাসনের তথ্য বলছে, মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে স্নান সেরেছেন ২.১ কোটি। বৃহস্পতিবার ৮৫.৪৬ লক্ষ স্নান করায় পার হয়েছে ৪৯.১৪ কোটি। শুক্রবার সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি। যা বিশ্বে সর্বকালীন রেকর্ড। আরও একটি শাহি স্নান বাকি। এই নিরিখে কুম্ভ নিজেই প্রতিদিন রেকর্ড ভাঙছে। অন্য আরও চারটি বিশ্ব রেকর্ডের প্রস্তুতিও হয়েছে। এদিন একদিনে ১০ কিমি লম্বা জায়গায় সাফাইয়ে হাত লাগালেন ১৫ হাজার কর্মী।

জানা গিয়েছে, আজ, শনিবার নদীতে নেমে সাফাই করবেন ৩০০ জন, একসঙ্গে। কাল, রবিবার ত্রিবেণীর পথে চলবে হাজার ই-রিকশা। সোমবার ১০ হাজার লোকের হাতের ছাপ নেওয়া হবে। ভিড় আগের থেকে একটু কম হতেই এই সব রেকর্ডের প্রস্তুতি। পাঁচ লক্ষ কল্পবাসী ১৩ তারিখ এক মাসের কৃচ্ছ্রসাধনের কল্পবাস করে ফিরেছেন। সাধুরাও চলে গিয়েছেন নিজেদের আখড়ায় বা অনেকে অযোধ্যা, বারাণসীতে। ওই সাধু-মহাত্মাদের স্নান করা জলে নেমে স্নানেই নাকি বেশি পুণ্যলাভ। এই বিশ্বাস শুনিয়েছেন শায়িত হনুমান মন্দিরের এক সেবাইত।

এখন বেশিরভাগটাই সাধারণ মানুষ। প্রয়াগরাজ জংশনে নামতেই পুলিশ সোজা ঠেলে সরিয়ে দেবে সিভিল লাইন্সের দিকে। ট্রেন স্টেশনে দাঁড়াতেই হু হু করে লোক নামছে। শহরজুড়ে পুলিশের একটা বিরাট অংশ উত্তরপ্রদেশের অন্য ৭১টি জেলার। ফলে রাস্তাঘাটের সম্যক ধারণা নেই। তিন কিমি দূরত্ব পেরোতে অতিক্রম করতে হয়েছে ১৭/১৮ কিমি। সেটা শাহি স্নানের তারিখ পড়লে। সঙ্গমের কতটা কাছে যাওয়া যাবে সেটা নির্ভর করছে ভাগ্যের উপর। ওই মুহূর্তে মেলা চত্বরে মানুষের সংখ্যা দেখেই দুই বা চার চাকার অনুমতি মিলছে। সঙ্গম দ্বার বা নন্দীদ্বার চোখে পড়লেই নিশ্চিত যে, কাছেই মিশেছে গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতী।

২২টি সেক্টর জুড়ে বিরাট ব্যবস্থা। মৌনী অমাবস্যার পর থেকেই অখণ্ড মহামণ্ডলেশ্বর বা ১০০৮ মহামণ্ডলেশ্বর বা ১০৮ মণ্ডলেশ্বরের ছবি দেওয়া তাঁবুতে লোক কমতে শুরু করেছে। বিভিন্ন ধর্মীয় চ্যানেলে প্রতিনিয়ত যাঁদের প্রবচন, ধর্মকথা বা জ্ঞান বিলোতে দেখা যায়, তাঁরাও আলাদা আলাদা তাঁবুতে ছিলেন। হোর্ডিংয়ে তাঁদের বিজ্ঞাপন অবশ্য এখনও চোখে পড়বে। তেমনই প্রচুর তোরণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের। আর ছবি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • এবারে ১৪৪ বছরের পুণ্যতিথিতে আয়োজিত হয়েছে এই মহাকুম্ভ।
  • শনি, রবি, বৃহস্পতির অবস্থানের উপর ভিত্তি করে এই তারিখ তৈরি হয়।
  • প্রশাসনের তথ্য বলছে, মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে স্নান সেরেছেন ২.১ কোটি। বৃহস্পতিবার ৮৫.৪৬ লক্ষ স্নান করায় পার হয়েছে ৪৯.১৪ কোটি। শুক্রবার সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি।
Advertisement