সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের কবরকে কেন্দ্র করে হিংসার আগুনে জ্বলছে নাগপুর। হামলা চালানো হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের উপর। এই ঘটনার মাঝেই 'ঔরঙ্গজেবের সমর্থনকারী'দের কড়া সুরে হুঁশিয়ারি দিলেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে। জানালেন, 'যারা দেশদ্রোহী ঔরঙ্গজেবকে সমর্থন করছে তাঁরাও দেশদ্রোহী।

সোমবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শিণ্ডে বলেন, "ঔরঙ্গজেব মহারাষ্ট্র দখল করতে এসেছিলে। কিন্তু এখানে ওকে শিবাজির মতো বীরের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। যারা এখনও ওর (ঔরঙ্গজেব) প্রশংসা করছে, তারা দেশদ্রোহী ছাড়া আর কিছুই নয়।" পাশাপাশি শিণ্ডে আরও বলেন, "এই মহারাষ্ট্রে কেউ ঔরঙ্গজেবের সমর্থন করবে না। ওই নিষ্ঠুর শাসক ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের শত্রু ছিল, দেশের শত্রু ছিল, দেশদ্রোহী ছিল। একজন হামলাকারী, মা-বোনেদের উপর অত্যাচার চালিয়েছিল ওই আততায়ী। মন্দির ভেঙেছিল, ছত্রপতি সম্ভাজি মহারাজকে নির্যাতন করেছিল এই ক্রুড় শাসক। ফলে যে বা যারা ওর গুণগান গাইবে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
পাশাপাশি, মহারাষ্ট্রে যে ঔরঙ্গজেবের কবর সরাতে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তাকে সমর্থন জানান শিণ্ডে। বলেন, "জনগণ যে আন্দোলন করছে তা নৈতিক। আমাদের রাজার প্রতি ভালোবাসা থেকে করেছেন। সেই ঘটনায় পুলিশ, প্রশাসনের আততায়ীরা হামলা ঘটনা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। যারা এই ধরনের কাজ করবে তাঁদের ছেড়ে কথা বলবে না সরকার।"
উল্লেখ্য, মোগলসম্রাট ঔরঙ্গজেবের কবর সরানোর দাবিতে মহারাষ্ট্রে বিক্ষোভ শুরু করেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। তেমনই এক বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে অশান্তি চরম আকার নেয় নাগপুরে। গুজব ছড়ায়, ওই বিক্ষোভে একটি বিশেষ ধর্মগ্রন্থ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সেই গুজব মুহূর্তের মধ্যে ভয়াবহ আকার নেয়। ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। দু’টি জেসিবি-তে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, এছাড়াও একাধিক গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এলে, তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। ইট-পাথরে ঘায়ে অন্তত বহু পুলিশ কর্মী জখম হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকাজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়। ইতিমধ্যে ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। প্রশাসনের দাবি বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।