বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ভয়াবহ ভূমিধসে বিধ্বস্ত সিকিমের লাচেন ও লাচুং। ঘটনায় হাজার জন পর্যটক সিকিমে আটকে পড়েছেন বলে খবর। জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধারকাজ চলছে। শুক্রবার পর্যন্ত দেড় হাজার পর্যটককে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। এই কথাই জানিয়েছেন, সিকিমের এক উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তা।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয় সিকিমের লাচেন ও লাচুংয়ে। ভারী বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন জায়গায় ধস নামতে শুরু করে। ফলে বন্ধ হয়ে যায় গুরুত্বপুর্ণ রাস্তাগুলি। যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। আটকে পড়েন বহু পর্যটক। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে দ্রুত উদ্ধারকাজে নামে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের টিম। শুধু তাই নয়, প্রশাসনের পক্ষ থেকেও পর্যটক ও স্থানীয়দের উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নামিয়ে আনার কাজ শুরু হয়। উত্তর সিকিমের এই দুই জায়গা পর্যটনের অন্যতম জায়গা। এই সময় পর্যটকদের ভিড়ও থাকে যথেষ্ট। ফলে উদ্বেগ ছড়ায় বিভিন্ন মহলে। পর্যটকদের নিরাপদে নামিয়ে আনাটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় সিকিম প্রশাসনের কাছে।
মাঙ্গানের পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্ট (এসপি) সোনম দেচু ভুটিয়া বলেন, ভূমিধসের কারণে রাস্তায় আটকে পড়েছিলেন প্রায় দেড় হাজার পর্যটক। তাঁদের মধ্যে আতঙ্কও ছড়িয়েছিল। দেড় হাজার পর্যটককে বৃহস্পতিবার রাতেই আশেপাশের গ্রামে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। পর্যটকরা থানা, গুরুদ্বার, ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ ক্যাম্পে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। আজ শুক্রবার তাঁদের উদ্ধারের কাজ শুরু হয়। উদ্ধার হওয়া পর্যটকদের গ্যাংটকের উদ্দেশ্যে রওনার কাজও চলছে। সরকারি তথ্য অনুসারে লাচেন-চুংথাং সড়কের মুন্সিথাং, লাচুং-চুংথাং অংশের লেমায় ব্যাপক ভূমিধস হয়েছে। শুধু তাই নয়, আরও একাধিক জায়গাতেও ধসের খবর এসেছে।
আপাতত উত্তর সিকিমের সমস্ত ভ্রমণ অনুমতিপত্র বাতিল করা হয়েছে। আগে থেকে যে সব অনুমতিপত্র দেওয়া হয়েছিল, সেইসবও বাতিল করা হয়েছে বলে খবর। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কোনও অবস্থাতেই পর্যটকদের উত্তর সিকিমে না পাঠানোর নির্দেশ জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ট্যুর অপারেটরদের এই বিষয়ে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে সব পর্যটকরা আটকে আছেন, তাঁদেরও দ্রুত উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় পাঠানো হবে। সেই কথা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে একাধিক পর্যটক সিকিম ঘুরতে গিয়েছিলেন। অনেকেই এই বিপর্যয়ে আটকে পড়েছেন বলে খবর।
