সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে শ্রীনগর যাওয়ার পথে অল্পের জন্য বিমান দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলেন তৃণমূলের কাশ্মীরগামী প্রতিনিধিদল। শ্রীনগরগামী যে ইন্ডিগোর উড়ানটিতে তাঁরা যাত্রা করছিলেন সেটি মাঝ আকাশে তীব্র ঝঞ্ঝার মধ্যে পড়ে। শ্রীনগরের কাছাকাছি পৌঁছনোর পর শুরু হয় প্রবল শিলাবৃষ্টি। ভারী শিলার আঘাতে উড়ানটির নাক অর্থাৎ সামনের অংশ ভেঙে যায়। একপাশে গর্ত হয়ে যায়। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হন পাইলট। মাঝআকাশে ঝড় ও শিলাবৃষ্টির মধ্যে পড়া উড়ানটির এক যাত্রীর ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বড় বড় শিলা উড়ানটিকে আঘাত করছে। প্রচণ্ড কাঁপছে উড়ানটি। যাত্রীরা আতঙ্কে। তবে সন্ধে সাড়ে ছ'টা নাগাদ উড়ানটি শ্রীনগর বিমানবন্দরে নিরাপদে নামাতে সক্ষম হন পাইলট।
সেই বিমানে ছিলেন তৃণমূলের পাঁচ প্রতিনিধিও। এঁরা হলেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুইয়া এবং রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন, মমতাবালা ঠাকুর, নাদিমুল হক ও সাগরিকা ঘোষ। বিমানের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে সাগরিকা ঘোষ বলছিলেন, "প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলাম। আমার মনে হয়েছিল, জীবনটা বোধহয় শেষ। যে পাইলট আমাদের নামালেন তাঁকে স্যালুট। নামার পর দেখলাম বিমানের নাক ভাঙা।"
পাক গোলায় বিধ্বস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াতে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দলটি কাশ্মীর গিয়েছে। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পরে ভারতের প্রত্যাঘাতের পর থেকেই সীমান্তে গোলা বর্ষণের মাত্রা তীব্র করে পাকিস্তান। তাতে সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলির বহু মানুষ প্রাণ হারান। তাদের ঘরবাড়িও ধ্বংস হয়ে গিয়েছে পাক গোলায়। এই সমস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যেই পাঁচ সদস্যের দলীয় প্রতিনিধিদলকে সেখানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন তৃণমূলনেত্রী। ২১ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত এই দল শ্রীনগর, পুঞ্চ এবং রাজৌরির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করবে। তারপর এই প্রতিনিধি দল ফেরত এসে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রিপোর্ট দেবে।
কাশ্মীরে পৌঁছে বুধবার সন্ধ্যায় জম্মু কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে বৈঠক করে দলটি। ওই বৈঠকে ছিলেন ওমরের বাবা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাও। পাক হানায় কাশ্মীরের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্দশা তুলে ধরার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান ওমর। বৃহস্পতিবার শ্রীনগর থেকে সড়কপথে চার ঘণ্টার দূরত্বে পুঞ্চে যাবে প্রতিনিধি দলটি। সেখানকার পরিস্থিতি তাঁরা সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করবেন।
