সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর ১৪ মাস পর লোকসভা নির্বাচন। এর মাঝে আরেকটি বাজেট সেশন আসবে বটে। তবে সেটা ভোট অন অ্যাকাউন্ট। তাই ভোটের আগে সাধারণের মনজয় করতে হলে চমকপ্রদ কিছু করে দেখাতে হবে এবারের বাজেটেই। স্বাভাবিকভাবেই এই বাজেট ঘিরে বহু প্রত্যাশা আমআদমির। আবার চ্যালেঞ্জও কম নয়। গোটা বিশ্ব যখন আর্থিক মন্দার আশঙ্কায় ত্রস্ত, তখন সবদিক সামলে কতটা প্রত্যাশা অর্থমন্ত্রী পূরণ করতে পারেন, সেটাই দেখার।
আর্থিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী মন্দার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, সেটা ভারতকে স্পর্শ করতে পারবে না। কিন্তু অর্থনৈতিক সমীক্ষার দাবি যে পরে অনেকাংশেই মেলে না, সেটা ভালই জানেন অর্থমন্ত্রী। তাই মন্দা রুখে দিতে নির্মলা কী কী পদক্ষেপ নেন সেটা দেখার। আবার সবদিক সামলে বড় ঘোষণাও করতে হবে। কাজটা কঠিন। সেই কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়েই প্রস্তুত অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রকের দুই প্রতিমন্ত্রীও দাবি করেছেন, বাজেটে সবদিক বজায় রাখা হবে।
আপাতত দেশের অর্থনৈতিক মহলে বাজেটে কী কী ঘোষণা হতে পারে সেটা নিয়ে জল্পনা চলছে। একই সঙ্গে প্রত্যাশা বাড়ছে আমআদমির। কী সেই প্রত্যাশা?
১। আয়কর ছাড়: মুদ্রাস্ফীতি, মূল্যবৃদ্ধির (Price Rice) মারে জর্জরিত দেশ। বাজারে কমছে পণ্যের চাহিদা। ফলে কমছে উৎপাদন পরিমাণ। এই পরিস্থিতিতে একপ্রকার বাধ্য হয়েই আসন্ন বাজেট অধিবেশনে ব্যক্তিগত আয়ে কর কাঠামোয় বড়সড় ছাড়ের ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্র সরকার। গত দু’বছর আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমায় কোনও বদল করা হয়নি। ট্যাক্স স্ল্যাব (Tax Slab) বা করের হারে বদল করা হলেও সেভাবে স্বস্তি পায়নি মধ্যবিত্ত। তবে এবার কেন্দ্র সেটাই করতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। এবারে আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা আড়াই লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ পর্যন্ত করা হতে পারে।
[আরও পড়ুন: সুন্দরবন উপকূলে নজরদারি বাড়াতে ব়্যাডার, আকাশপথে থাকছে আধুনিক হেলিকপ্টারও]
২। গৃহঋণে করছাড়: কেন্দ্রের নয়া বাজেটে আয়করের পাশাপাশি গৃহঋণেও বড়সড় ছাড় দেওয়া হতে পারে। আসলে করোনা পরবর্তী সময়ে আবাসন শিল্পে খানিকটা উন্নতি হলেও, গত এক বছরে ফের ভাঁটার টান দেখা যাচ্ছে। তাই এই সেক্টরটিকে চাঙ্গা করার কথা ভাবতে পারে কেন্দ্র। সরাসরি গৃহঋণের সুদ না কমানো হলেও গৃহঋণ নিলে আয়করে বড়সড় ছাড় ঘোষণা করা হতে পারে। সেই করছাড় গিয়ে পৌঁছাতে পারে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
৩। পরিকাঠামো ও জনমোহিনী প্রকল্প: এটাই দ্বিতীয় মোদি সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। স্বাভাবিকভাবেই একেবারে নিচুতলার কাছে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। বিশেষ করে যেভাবে তৃণমূল বা কংগ্রেস (Congress) শাসিত রাজ্যগুলি সরাসরি নিচুতলার মানুষের কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে, সেই ধরনের কোনও প্রকল্প ঘোষণা করা হতে পারে। সেই সঙ্গে রাস্তাঘাট, সেতু এবং অন্যান্য পরিকাঠামো খাতেও বাড়তে পারে ব্যয় বরাদ্দ।
৪। বরাদ্দ বৃদ্ধি: এবারের বাজেটে সরাসরি নগদ প্রদান, বা বড় ঋণ ঘোষণা বা নতুন কোনও প্রকল্প ঘোষণা করা হতে পারে। আয়ুস্মান ভারত বা পিএম-কিষান (PM Kishan) প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়ানো হতে পারে। ১০০ দিনের কাজে শ্রমিকদের মজুরিও বাড়তে পারে।
[আরও পড়ুন: কী তেল-মশলা ব্যবহার হয়? মিড ডে মিল চেখে দেখে প্রশ্ন কেন্দ্রীয় পরিদর্শকদের]
৫। নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস: গত বছর বাজেটেই ৪০০টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস তৈরির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। সেইমতো কাজ শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কিছু বন্দে ভারত (Vande Bharat) ট্রেন চালু হয়েছে। এবছরও নতুন করে ৪০০টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালু করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে রাজধানী বা তেজসের মতো অন্য সুপারফাস্ট ট্রেনগুলি বন্ধ করে দেওয়ারও একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।