সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্কুলের বেতনের মাত্র ৮০০ টাকা বাকি ছিল। অনেক চেষ্টা করেও সেটা মেটাতে পারেননি খেতমজুর মা। কিন্তু টাকা বাকি থাকার 'অপরাধে' পড়ুয়াকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই দুঃখ-অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হল নবম শ্রেণির ছাত্রী। মেয়েকে হারিয়ে শোকে পাথর মা।

মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড় জেলায়। জানা গিয়েছে, শনিবার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে স্কুলে গিয়েছিল ১৭ বছর বয়সি ওই ছাত্রী। কিন্তু স্কুলে পৌঁছনোর পরে তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পরীক্ষায় বসতে পারবে না। কারণ বেতনের ৮০০ টাকা বাকি রয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে ওই ছাত্রীকে রীতিমতো কথা শোনান স্কুলের প্রিন্সিপাল এবং অন্যান্যরা। অপমানিত হয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে সটান চলে যায় নিজের ঘরে। পরে সেখান থেকেই উদ্ধার হয় নবম শ্রেণির ছাত্রীর নিথর দেহ।
মেয়ের এমন পরিণতিতে শোকে মুহ্যমান তার মা। তিনি জানান, প্রতিদিনের মতোই খেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে বাড়ি ফেরে ওই ছাত্রী। বেশ কিছুক্ষণ পরে খেত থেকে ফিরে এসে জানতে পারেন, তাঁর মেয়ে আর নেই। শোকাহত মা চান, স্কুল কর্তৃপক্ষের কঠোর শাস্তি হোক। সেই মর্মে স্কুল ম্যানেজার সন্তোষ কুমার যাদব, অফিসার দীপক সরোজ এবং প্রিন্সিপাল রাজকুমার যাদবের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত ছাত্রীর মা।
গোটা ঘটনা নিয়ে সরব স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ আরিফ। তিনি পেশায় আইনজীবীও। তিনি বলেন, "শিক্ষার নামে যদি পড়ুয়াদের এইভাবে অপমান করা হয়, তাহলে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনেরও পদক্ষেপ করা উচিত। শিক্ষা নিয়ে যারা ব্যবসা করে তাদের শাস্তি দেওয়া দরকার। শিশুদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।" পরিবার সূত্রে খবর, স্কুলের বেতন বাবদ ১৫০০ টাকা আগেই মিটিয়ে দিয়েছিল মৃতার মা। কিন্তু ৮০০ টাকা বাকি থেকে গিয়েছিল। আর সেই বকেয়া বেতনই কেড়ে নিল এক ছাত্রীর প্রাণ।