সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: নির্বাচন কমিশনের বিশেষ নিবিড় সংশোধনী মামলাতেও সুপ্রিম কোর্টে আধার ইস্যু? নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র হিসাবে আধার ব্যবহার করা হচ্ছে না কেন? নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্ন করল সুপ্রিম কোর্ট। জবাবে কমিশন আরও একবার স্পষ্ট করে দিল, আধার শুধুমাত্র নাগরিকের পরিচয়পত্র। নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র নয়।
বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। যাকে বলা হচ্ছে ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী- সহ অযোগ্য ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কমিশন। তারা বলেছে, যাতে শুধুমাত্র যোগ্য ভারতীয় নাগরিকরাই ভোটানের অধিকার পান সেটা নিশ্চিত করতেই এই সংশোধনী। তালিকাভুক্ত ভোটার বা নতুন আবেদনকারীদের বাড়ি বাড়ি পরিদর্শনের সময় বুথ স্তরের অফিসাররা একটি ফর্ম দেবেন। সেই ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে। এর পাশাপাশি ভারতীয় নাগরিকত্বের সেলফ অ্যাটেস্টেট ঘোষণাপত্রও জমা দিতে হবে।
নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র হিসাবে মোট ১১টি নথির তালিকা দিয়েছে কমিশন। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ১১টি নথির তালিকায় রয়েছে- সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার পরিচয়পত্র, ১ জুলাই ১৯৮৭-র আগে জারি হওয়া কোনও সরকারি নথি, জন্ম সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট, শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট, স্থায়ী বাসিন্দা সার্টিফিকেট, বনপালের সার্টিফিকেট, কাস্ট সার্টিফিকেট, এনআরসি অন্তর্ভুক্তি, পারিবারিক রেজিস্টার এবং জমির দলিল। সমস্যা হল, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড বা রেশন কার্ড কোনওটাই এই তালিকায় নেই। সেটা নিয়েই এদিন প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, যদি আধার কার্ডের উপর ভিত্তি করে জাতিগত শংসাপত্র দেওয়া যায়, তাহলে আধারকে ভোটার তালিকায় প্রমাণপত্র হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না কেন?
জবাবে সুপ্রিম কমিশনের আইনজীবী বলেন, "আধার আইনের অধীনে প্রতিটি বাসিন্দার অধিকার আছে আধার কার্ড পাওয়ার। কেউ যদি আমার পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলে, আমি আধার দেখিয়ে তা প্রমাণ করতে পারি। কিন্তু আধার নম্বর নাগরিকত্ব প্রমাণ করে না।" কমিশনের আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, জাতিগত সংশাপত্রও শুধু আধারের ভিত্তিতে দেওয়া হয় না।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে এত ঘটা করে নাগরিকদের আধার তৈরি করানোরই বা কী দরকার, বা সব সরকারি প্রকল্পের জন্য আধার কেনই বা বাধ্যতামূলক।
