সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোনও মহিলা ও পুরুষের একসঙ্গে হোটেলে থাকার অর্থ যৌনতার অনুমতি নয়। সম্প্রতি এক ধর্ষণ মামলায় নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে এমনটাই জানাল বম্বে হাই কোর্ট। নিম্ন আদালতের নির্দেশ ছিল যেহেতু ওই তরুণী অভিযুক্তের সঙ্গে স্বেচ্ছায় হোটেলে যেতে সম্মত হয়েছিলেন ফলে ধর্ষণের অভিযোগ খাটে না।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২০ সালের মার্চ মাসে। গুলশার আহমেদ নামে এক ব্যক্তি এক তরুণীকে বিদেশে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এই বিষয়ে কথা বলার জন্য তাঁকে একটি হোটেলে ডাকেন। গুলশার ও নির্যাতিতা দুজনের নামেই বুক করা হয়েছিল হোটেলটি। অভিযোগ, হোটেলে নিয়ে গিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত। ঘটনার কথা কাউকে বললে তাঁকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। কোনওমতে সেখান থেকে পালিয়ে এসে গুলশারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তরুণী।
তবে এই মামলা নিম্ন আদালতে উঠলে গুলশারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ খারিজ করেন বিচারক। যুক্তি দেওয়া হয়, যেহেতু ওই তরুণী স্বেচ্ছায় অভিযুক্তের সঙ্গে হোটেলে গিয়েছিলেন ফলে গুলশারের সঙ্গে যৌন সংসর্গে সায় ছিল তাঁর। তবে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বম্বে হাই কোর্টের গোয়া বেঞ্চের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা। মামলার শুনানিতে হাই কোর্টের তরফে জানানো হয়, নিম্ন আদালতের এই রায় ত্রুটিপূর্ণ। বিচারপতি বলেন, অভিযুক্ত ও নির্যাতিতা এক সঙ্গে হোটেল বুক করেছেন তার সপক্ষে প্রমাণ রয়েছে ঠিকই, কিন্তু এর অর্থ এটা নয় যে নির্যাতিতার যৌন সম্পর্কে সম্মতি দিয়েছেন। দুজনের একসঙ্গে হোটেলে যাওয়া ও হোটেলের ভিতরে যা হয়েছে দুটোকে গুলিয়ে ফেলেছে নিম্ন আদালত। ঘটনার পর যেভাবে কাঁদতে কাঁদতে ওই তরুণী হোটেল থেকে বেরিয়ে আসেন এবং সেদিনই পুলিশের দ্বারস্থ হন তাতে স্পষ্ট যে যৌন সম্পর্কে তরুণীর সম্মতি ছিল না। পুলিশকে ওই তরুণী যে বয়ান দিয়েছেন সেই একই তথ্য ধরা পড়ে এক হোটেল কর্মীর বয়ানেও।
তবে এই ঘটনায় হাই কোর্টে অভিযুক্তের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, ওই তরুণী তাঁর সঙ্গে মিলে হোটেল বুক করেছিল। একসঙ্গে লাঞ্চ করেছেন, বিনা প্রতিবাদে তাঁর সঙ্গে হোটেলে যৌন সম্পর্ক করেছেন। তবে তরুণীর সম্মতিতে যৌন সম্পর্ক হয়েছে এই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে উচ্চ আদালত। এবং নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নতুন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য।