সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কপালে এয়োতির চিহ্ন দেখে বেছে বেছে স্বামীদের হত্যা করেছিল পাক মদতপুষ্ট জেহাদিরা। এই নারকীয় হত্যালীলা ক্ষত তৈরি করেছিল দেশের হৃদয়ে। বদলার জ্বালায় জ্বলছিল আসমুদ্র হিমাচল। সেই জ্বালা জুড়িয়ে মঙ্গলবার মধ্যরাতে প্রত্যাঘাত করেছে ভারতীয় সেনা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে অপারেশনের নাম রাখা হয়েছিল 'সিঁদুর' (Operation Sindoor)। আর সেই অপারেশনের সাফল্য নিয়ে সেনার সাংবাদিক সম্মেলন করলেন দুই মহিলা কমান্ডার। যা দেখে অনেকে বলছেন, যে মহিলাদের মনে আতঙ্কের চিহ্ন গেঁথে দিতে চেয়েছিল জেহাদিরা সেই নারীশক্তিই বিশ্বের সামনে প্রত্যাঘাতের সাফল্যগাথা তুলে ধরল। কারা এই দুই কমান্ডার, যাদের নিয়ে কৌতূহল আসমুদ্র হিমাচলে?
নাম কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং ব্যোমিকা সিং। প্রথমজন ইতিহাস তৈরি করা সেনানায়িকা, ভারতীয় সেনার সিগন্যাল কর্পের আধিকারিক এবং দ্বিতীয়জন উইং কমান্ডার। দুজনের সামরিক কেরিয়ার তারাখচিত। বাহিনীতে সম্মানিত নাম।
কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ভারতীয় সেনার সিগন্যাল কর্পের আধিকারিক। তিনিই প্রথম মহিলা অফিসার যিনি বহুজাতিক সামরিক মহড়ায় ভারতীয় সেনার কন্টিনজেন্টকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে পুণেতে আয়োজিত হয়েছিল এই মহড়া. যা এখনও দেশের মাটিতে সবচেয়ে বড় মহড়া। সেখানেই ভারতীয় সেনার টিম 'এক্সারসাইজ ফোর্স ১৮'-এর ৪০ সদস্যকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সামনে থেকে। মহড়ায় অংশ নেওয়া ১৮টি কন্টিজেন্টের মধ্যে একমাত্র সোফিয়া কুরেশিই মহিলা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, একটানা ৬ বছর রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর সদস্য ছিলেন। ২০০৬ থেকে কঙ্গোয় শান্তিরক্ষা বাহিনীর অবজারভার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। অশান্ত এলাকায় ত্রাণ বিলির কাজও করেছেন। সোফিয়ার দাদুও ছিলেন সেনাবাহিনীতে। মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রির অফিসারের সঙ্গেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন সোফিয়া।
ব্যোমিকা সিং উইং কমান্ডার। ভারতীয় বায়ুসেনার একাধিক ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনের অংশ হয়েছেন। উত্তর পূর্ব ভারতের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর কাজের জন্য একাধিকবার প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ২০০৪ সালে সেনায় অন্তর্ভুক্তি হয়েছিল তাঁর। তারপর থেকে দাগবিহীন কেরিয়ার। উড়িয়েছেন চেতক এবং চিতার মতো হেলিকপ্টার। ২০১৭ সালে উইং কমান্ডার পদে উন্নীত হয়েছেন। তাঁর কাজ বায়ুসেনায় মহিলা আধিকারিকদের জন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। স্কুলে থাকাকালীন ব্যোমিকা ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরে (এনসিসি) যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েন। পরিবারে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন।
