রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: সাধের ভিস্তা ডোমে যাত্রী মিলছে না। লোকসানের বোঝা টানতে হচ্ছে। এই অবস্থায় পর্যটক স্পেশাল এই ট্রেনের রুট বদলের ভাবনা ভাবছে রেল। তবে রুট নয়, বাস্তবসম্মত সময়সূচি না থাকাতেই ভিস্তা ডোম যাত্রী পাচ্ছে না বলে অভিযোগ ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়ীদের। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে শোরগোল শুরু হয়েছে।
২০২১ সালের ২৬ আগস্ট থেকে এই ট্রেন যাত্রা শুরু করে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার জংশন পর্যন্ত প্রথমে সপ্তাহে তিন দিন এই ট্রেন চলত। পরে ওই বছরই ২২ নভেম্বর থেকে এই ট্রেন সপ্তাহে সাত দিনই চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় রেল। মহানন্দা, গরুমারা, বক্সা, জলদাপাড়া বনাঞ্চলের মধ্য দিয়ে চলা এই ট্যুরিস্ট স্পেশাল ট্রেন প্রথম প্রথম ভিড়ে ঠাসা থাকত। মুলত এই ট্রেনের দুই দিক সাদা কাচের ভেতর থেকে ভিস্তা ডোম কোচে চড়তেন পর্যটকরা। ট্রেনের ভিতর থেকে চা-বাগান ও বনাঞ্চলের বুক চিরে যাওয়া এক অনাবিল আনন্দ দিত পর্যটকদের। কিন্তু তার পরেও এখন আর সেভাবে যাত্রী হচ্ছে না এই ট্রেনে। আর সেই কারণে এই ট্রেনের রুট বদলের ভাবনা ভাবছে রেল।
[আরও পড়ুন: ফোকাস ডাবলসে, প্যারিস অলিম্পিকের সিঙ্গলস থেকে নাম তুলে নিলেন মারে]
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডি আর এম অমরজিৎ গৌতম বলেন, “ভিস্তাডোমে আমরা বর্তমানে সেভাবে যাত্রী পাচ্ছি না। যে কারণে এই ট্রেনটিকে মালবাজার থেকে গরুমারা হয়ে চ্যাংড়াবান্ধা লাইনে চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে। এখনও সিদ্ধান্ত কিছু হয়নি।” এদিকে রেলের অবাস্তব সময়সূচির কারণেই এই ট্রেন যাত্রী পাচ্ছে না বলে অভিযোগ পর্যটন ব্যবসায়ীদের। পর্যটন ব্যবসায়ীদের আরও অভিযোগ, ডুয়ার্স রুট বাদ দিয়ে এই ট্রেন চালালে আরও কম যাত্রী হবে। ডুয়ার্স টুরিজম ডেভলপমেন্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি পার্থসারথি রায় বলেন, “এই ট্রেন সকাল ৭টায় এনজেপি থেকে ছাড়ে। কলকাতা থেকে ট্রেনে আসা কোনও পর্যটকই ওই দিন এই ট্রেন ধরতে পারেন না। এই ট্রেন ধরতে হলে বাইরের পর্যটকদের একদিন শিলিগুড়িতে থাকতে হয়। এই সময়সূচি চূড়ান্ত অবাস্তব ও অবৈজ্ঞানিক। সেই কারণে এই ট্রেন যাত্রী পাচ্ছে না।
ডুয়ার্সের অতীব সুন্দর বনাঞ্চল ও চাবাগান নিয়ে তৈরি নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগের জন্যই এই ট্রেন। ডুয়ার্স রুট বাদ দিয়ে এই ট্রেন অন্য কোনও রুটে আর যাত্রী পাবে না। আমরা এই ট্রেনের সময়সূচি বদলের দাবি জানিয়েছি।” তবে আরেকটি মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে বিভিন্ন বনাঞ্চল বন্ধ থাকার কারণেই পর্যটকদের আনাগোনা কম ডুয়ার্সে। সেই কারণে যাত্রী কম হচ্ছে এই ট্রেনে। ফলে এই সময় কম যাত্রীর কারণে এই ট্রেনের রুট বদলের ভাবনা সঠিক নয় বলে মনে করছেন অনেকে।