সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্ল্যাক হোল (Black Hole)। মহাকাশের (Space) অনন্ত বিস্ময়। এবার ভারতীয় বিজ্ঞানীরা সাক্ষী হলেন এক আশ্চর্য বিরল মহাজাগতিক দৃশ্যের। তিনটি অতিকায় ব্ল্যাক হোলের মিলন দেখতে পেল বিজ্ঞানীদের দলটি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে এব্যাপারে জানানো হয়েছে।
‘অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে প্রকাশিত হয়েছে এই নতুন আবিষ্কারের কথা। সেখানে বলা হয়েছে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা NGC7733 ও NGC7734 নামের দুটি ছায়াপথের মিলন পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তখনই তাঁদের নজরে পড়ে একটি অজানা বিকিরণ। ওই দুই ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসা সেই বিচ্ছুরণ থেকেই ক্রমে আবিষ্কৃত হয় একটি ছোট ছায়াপথ। তার নাম রাখা হয় NGC7733N। পরে একটি তৃতীয় ছায়াপথও আবিষ্কৃত হয়। দেখা যায়, ওই তিনটি ছায়াপথেরই একটি করে অতিকায় ব্ল্যাক হোল রয়েছে। সেই তিনটি ব্ল্যাক হোলই পরস্পর যুক্ত হয়ে তৈরি করেছে একটি অত্যন্ত বিরল নিউক্লিয়াস। এই ধরনের নিউক্লিয়াসকে বলা হয় AGN।
[আরও পড়ুন: বজ্রপাতে প্রাণহানি রুখবে ছাতা! অভিনব আবিষ্কারে তাক লাগাল বাংলার ‘খুদে বিজ্ঞানী’]
এই ধরনের AGN জোট আগেও দেখা গিয়েছে। তবে তা দু’টি ব্ল্যাক হোলের ক্ষেত্রেই নজরে এসেছে। কিন্তু তিনটি ব্ল্যাক হোলের এমন মিলন এই প্রথম চোখে পড়ল জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এমনটা আসলে বিরল নয়। এই ধরনের ছায়াপথের মিলনের আরও নজির তাঁরা পর্যবেক্ষণে রাখবেন বলে জানা গিয়েছে। আগামিদিনে ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে আরও বিশদে জানতে এই ধরনের নিরীক্ষণ অত্যন্ত জরুরি হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ব্ল্যাক হোল নিয়ে নিত্যনতুন আবিষ্কার করছেন বিজ্ঞানীরা। কিছুদিন আগেই বিজ্ঞানীরা দাবি করেছিলেন মহাকাশে বিপুল সুনামি তৈরি করে ফেলতে পারে ব্ল্যাক হোল। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA জানিয়েছিল, যখন কোনও বিপুল ভরের ব্ল্যাক হোল নিজের কেন্দ্রে ঘূর্ণায়মাণ নিউক্লিয়াস গঠন করে তখন প্রচুর পরিমাণে গ্যাস তার কেন্দ্র থেকে সরে যায় মেরুর দিকে। এবং এভাবে চলতে চলতে যখন ব্ল্যাক হোলটির নিয়্ন্ত্রণ পুরো বিষয়টির উপর থেকে চলে যায়, তখন তার কেন্দ্রের সেই ঘূর্ণায়মাণ নিউক্লিয়াসের চাকতি সংলগ্ন অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা আবহাওয়ায় তৈরি হতে থাকে ঢেউ। সেই বিপুল গ্যাসীয় ঢেউ অনেকটাই দেখতে আমাদের পৃথিবীর সমুদ্রের ঢেউয়ের মতোই। এরপর সেই ঢেউ ব্ল্যাক হোলের সীমান্তের অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি তাপমাত্রার (যা সূর্যের থেকেও ১০ গুণ উত্তপ্ত হতে পারে) সংস্পর্শে এলে তা বিপুল ভাবে ছিটকে উঠে ছড়িয়ে পড়তে পারে ১০ আলোকবর্ষ পর্যন্ত। সেই প্রবল অভিঘাতকে কল্পনা করাও কঠিন।