সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক ডেটিং অ্যাপে আলাপ দু’জনের। ক্রমে সিদ্ধান্ত জীবনের পথে একসঙ্গে চলার। তারপর রীতিমতো আত্মীয়স্বজনের সান্নিধ্যে পুরোহিতের সামনে চার হাত এক হওয়া। এই পর্যন্ত শুনলে চেনা লাগে। কিন্তু ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত এই বিয়ে হয়েছে তুই তরুণীর মধ্যে। তাঁদের একজন দক্ষিণ ভারতীয়। অন্যজন বাংলাদেশি (Bangladesh)। কানাডার এই দুই সমকামী তরুণীর এই বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে তামিলনাড়ুতে (Tamil Nadu)।
সুবিক্ষা সুব্রামানি তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে। মা-বাবার সঙ্গে থাকেন কানাডায়। সেখানেই তাঁর সঙ্গে আলাপ বাংলাদেশি তরুণী টিনা দাসের। তারপর সম্পর্ক গড়ায় প্রেমের দিকে। ৬ বছরের সম্পর্কই শেষ পর্যন্ত বিয়েতে গড়ায়। তাঁরা সিদ্ধান্ত তামিল ব্রাহ্মণদের প্রথা মেনেই করবেন। সুবিক্ষার পরিবার মেয়ের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিল সহজেই। কিন্তু তাঁদের মত ছিল, তামিলনাড়ুতে নয় কানাডাতেই হোক বিয়ের অনুষ্ঠান। বিশেষ করে সুবিক্ষার বাবা। যদিও শেষ পর্যন্ত ভারতে আসাই মনস্থ হয়।
[আরও পড়ুন: অপ্রয়োজনে অপারেশন করলে মিলবে না স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা, বিজ্ঞপ্তি স্বাস্থ্য দপ্তরের]
সুবিক্ষা জানিয়েছেন, যেভাবে তাঁদের পরিবার পরিজন তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে তা তাঁকে বিস্মিত করেছেন। এমনকী, এই বিয়ে দিতে রাজিও হন এক পুরোহিত। শেষ পর্যন্ত রীতিমতো জাঁকজমক করেই সম্পন্ন হয় বিয়ে।
সুবিক্ষা উভকামী। প্রথমে একজন পুরুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। পরে টিনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হলে পরিবারকে বিষয়টা বুঝিয়ে বলতে সক্ষম হন তিনি। তাঁর মা-বাবা-ভাই সকলেই তা মেনে নেয়। কিন্তু টিনার ক্ষেত্রে অবশ্যটা লড়াইটা যথেষ্ট কঠিন ছিল। বাংলাদেশে থাকাকালীন ১৯ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। রক্ষণশীল হিন্দু পরিবারের মেয়ে সমকামী, তা মানতে পারছিল না পরিবার। ধারণা ছিল, বিয়ে দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
[আরও পড়ুন: গার্ডেনরিচে বাড়ি থেকে উদ্ধার ১৫ কোটি! ‘বাংলার অর্থনীতি ভাঙার চেষ্টা ইডির’, সরব ফিরহাদ]
কিন্তু তা হয়নি। তাঁর যৌন পছন্দের দিকটিকে সবাই একটা অসুখ বলে মনে করত। কেউই কথা বলতে চাইত না। এই ভাবে ৪ থেকে ৫ বছরের অসুখী দাম্পত্যের পরে যখন সন্তানের জন্য জোর করা শুরু হয়, তখনই টিনা সিদ্ধান্ত নেন শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার।
অবশেষে সব লড়াইয়ের শেষে দু’জন তরুণীর চারহাত এক হল। টিনা-সুবিক্ষার আশা, তাঁদের এই বিয়ে অন্য সমকামীদেরও উৎসাহ দেবে হতাশ না হয়ে জীবনকে সদর্থক নিয়ে যেতে।