সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বন্দুক আর বাচ্চা। জঙ্গি আর শৈশব। ভেজা চোখ থমকে তাকিয়ে রয়েছে বন্দুকের নলের দিকে। সদ্য বলি ফোটা ঠোঁটে হতবাক শব্দ। কিংবা কিছু না বুঝেই কান্না। ভয় পাবে নাকি ভরসা করবে। কোন দিকে যাবে সে, তাদের কাছে তো পুরোটাই নতুন অভিজ্ঞতা। সদ্য উর্বর হওয়া মগজ তো এখনও এসব শেখেনি। কী নামেই বা ডাকবে? যে দুধের শিশুর কান্না শুনলেই মা, এগিয়ে আসতেন দুধের বোতল নিয়ে, নরম তোয়ালে দিয়ে মুছিয়ে মুখ। সেই শিশুর মুখে হয়তো দুধের বোতল রয়েছে, কান্না পেলে কোলে নিয়ে দোলও রয়েছে। কিন্তু মায়ের কোল নয়, বরং জঙ্গিদের ডেরায় এক ভয়ের আশ্রয়।
সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা গিয়েছে হামাসর বন্দুক কাঁধেই সামলাচ্ছেন বন্দি ইজরায়েলি খুদেদের। কেউ দোলাচ্ছেন দোলনা, কেউ কোলে নিয়ে বাচ্চা ভোলাচ্ছেন। এক কাঁধে বন্দুক, চোখে তীব্র হিংসার আগুন নিয়েই শৈশবকে রক্তচক্ষু দেখাচ্ছেন হামাস। এই লালন-পালন অভিভাবক সুলভ নয়, এ যেন হুমকি। সদ্য ফোটা ফুলকে গাছ থেকে ছিঁড়ে নিয়ে বন্দুকের নলের শোভা বাড়ানো।
বারুদের গন্ধে ভারী মধ্যপ্রাচ্যের বাতাস। কখন কী হয়! আতঙ্ক সবার মনে। উদ্বেগে গোটা বিশ্ব। ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের আগুন যাতে আরব দুনিয়ায় ছড়িয়ে না পড়ে সেই চেষ্টা করছে আমেরিকা। এই পরিস্থিতিতে গাজা ভূখণ্ডে অভিযান শুরু করেছে ইজরেয়েলি সেনাবাহিনী। বহু পণবন্দির দেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলেও খবর।
[আরও পড়ুন: আসছে ইজরায়েলের ‘শক্তিশেল’! প্রাণভয়ে পালাচ্ছে গাজার হাজার হাজার মানুষ]
ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যম ‘হারেৎজ’ ও ‘জেরুজালেম পোস্ট’ সূত্রে খবর, শুক্রবার গাজা ভূখণ্ডে অভিযান চালিয়েছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। সাঁজোয়া গাড়ি ও বিশেষ বাহিনী গুঁড়িয়ে দিয়েছে হামাসের একটি ঘাঁটি। অভিযান চলাকালীন বেশ কয়েকজন ইজরায়েলি পণবন্দির দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা কত, তা নিশ্চিত করা যায়নি। এখনও হামাসের হাতে ১৫০ জন পণবন্দি রয়েছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ। এছাড়া, দক্ষিণ লেবাননে হেজবোল্লার ঘাঁটিতে গোলাবর্ষণ করেছে ইজরায়েল। আইডিএফ জানিয়েছে, লেবানন সীমান্তে হাইফা শহরের কাছে ড্রোন হামলা চালানোর চেষ্টা হয়। তারই জবাবে গোলাবর্ষণ।
গতকালই অবরুদ্ধ গাজার সাধারণ নাগরিক ও সেখানে অবস্থিত রাষ্ট্রসংঘের আধিকারিকদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণে চলে যেতে বলেছে ইজরায়েল। আর তার পর থেকেই হাজারে হাজারে সাধারণ নাগরিককে দেখা গিয়েছে দ্রুত বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে। পালটা বিবৃতি জারি করে বাসিন্দাদের গাজা ছাড়তে বারণ করেছে হামাস। এই পরিস্থিতিতে ইজরায়েল শিগগিরি গাজা ভূখণ্ডে আরও ভয়ংকর আক্রমণ চালাতে পারে সেই সম্ভাবনা ক্রমেই প্রবল হয়ে উঠছে। ইজরায়েলের সেনা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, গাজার সাধারণ নাগরিকরা যেন দ্রুত দক্ষিণ দিকে চলে যান নিজেদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে। বলা হয়েছে, হামাস (Hamas) জঙ্গিদের এলাকা থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে হবে তাঁদের। এর ফলে আগামিদিনে ইজরায়েল সেনার আক্রমণে সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানির বিষয়টি এড়ানো যাবে।