দেবাশিস কর্মকার: খুব শীঘ্রই শেষ হতে চলেছে কংক্রিট ও ইস্পাতের দিন৷ এবার বাড়ি তৈরি হবে কৃত্রিম হাড় এবং ডিমের খোলা দিয়ে৷ যা শহরাঞ্চলের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সঙ্গে যুঝতে পারবে এবং দূষণের হারও কমাবে৷ কেমব্রিজের একদল বিজ্ঞানী এই নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন৷ তাঁদের গবেষণার মূলে রয়েছে মূলত এই দু’টি বিষয়ই৷
বিশ্বে মোট কার্বন নির্গমণের দশ শতাংশের জন্যই দায়ী ইস্পাত এবং কংক্রিট৷ নির্মাণক্ষেত্রের এই প্রধান দুই উপকরণ তৈরিতে অতি উচ্চ তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়৷ প্রচুর পরিমাণ বিদ্যুৎও খরচ হয়৷ তবু বর্তমান সময়ে এই দু’টি উপকরণের উপরই নির্মাণ শিল্প সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল৷ বিজ্ঞানীরা তাই তৃতীয় বিকল্প উপকরণ ব্যবহারের জোর দিচ্ছেন৷ আর তার থেকেই কৃত্রিম হাড় ও ডিমের খোলা ব্যবহারের ভাবনাটি এসেছে৷ বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এই দুই উপকরণ ইস্পাত ও কংক্রিটের চেয়েও শক্তিশালী, টেকসই হবে৷
বায়ো ইঞ্জিনিয়ার ড. মিচেল ওয়েনের নেতৃত্বে কেমব্রিজের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষকদের একটি দল এই নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে৷ ইউ এস আর্মি কর্পস অফ ইঞ্জিনিয়ার এই গবেষণার জন্য অর্থ দিচ্ছে৷ ইতিমধ্যেই ড. ওয়েন কৃত্রিম হাড় এবং ডিমের খোলার নমুনা তৈরি করতে পেরেছেন৷ বর্তমানে এটি মানব শরীরে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়৷ তা কীভাবে বাড়ি তৈরিতে ব্যবহার করা যায়, সেটি নিয়েই গবেষণা হচ্ছে৷
নামমাত্র তাপমাত্রায় এই উপকরণ তৈরি করা যায়৷ ফলে এই প্রক্রিয়ায় কার্বন নির্গমণের মাত্রা খুব কম থাকে৷ হার এবং ডিমের খোলা প্রাণী শরীরের অংশ৷ প্রোটিন এবং খনিজের যৌগটি অত্যন্ত শক্ত৷ খনিজের জন্য কাঠামো শক্ত হয় এবং প্রেটিন তাকে যে কোনও আঘাত থেকে রক্ষা করতে পারে৷ কেমব্রিজের আর্কিটেকচার ডিপার্টমেণ্টের ড. মাইকেল রামেজও ভবিষ্যত্ নির্মাণ কৌশল নিয়ে একটি অন্য গবেষণা করছেন৷ বর্তমানে সুউচ্চ বাড়ি নির্মাণে একমাত্র সহায় কংক্রিট এবং ইস্পাত৷ কিন্তু ড. রামেজ কাঠ ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন৷ মানব সভ্যতার আদিতে বাড়ি তৈরিতে কাঠই ব্যবহার হত৷ গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে তিনি দাবি করেছেন, “লন্ডন শহর যদি ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা সামলাতে চায়, তবে জনঘনত্ব বাড়াতে হবে৷ তার একটা উপায় হল বহুতল নির্মাণ৷ আমাদের বিশ্বাস কংক্রিট ও ইস্পাতের চাইতে কোনও প্রাকৃতিক উপকরণ মানুষের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হবে৷
The post এবার বাড়ি হবে কৃত্রিম হাড়, ডিমের খোলায়! appeared first on Sangbad Pratidin.