সুকুমার সরকার, ঢাকা: গৃহযুদ্ধে পুড়ছে মায়ানমার। আঁচ পড়ছে ভারত ও বাংলাদেশেও। শরণার্থীদের ঢল ও জঙ্গি অনুপ্রবেশে প্রশ্ন উঠছে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে। পরিস্থিতি যে আরও খারাপ হতে চলেছে সেই ইঙ্গিত দিয়ে এবার ভারত ও বাংলাদেশকে সতর্ক করল আমেরিকা।
মায়ানমারে চলা গৃহযুদ্ধের প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশে। পড়শি দেশ থেকে উড়ে আসছে গোলাগুলি। মর্টারশেলের আঘাতে মৃত্যুর খবর মিলেছে একাধিকবার। ভারতের মিজোরাম ও মণিপুরের মতো মায়ানমার সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে সংঘাতের আঁচ পড়েছে। এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে ঢাকা ও দিল্লিকে সতর্ক করেছেন আমেরিকার দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী বিদেশমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। তিনি মনে করেন, মায়ানমারের পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। যে কারণে বাংলাদেশে শরণার্থী ও নিরাপত্তা নিয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এর প্রভাব পড়তে পারে ভারতেও। সামনে এই সমস্যা আরও গভীর হতে পারে।
শনিবার ওয়াশিংটনের থিংকট্যাংক ইউএস ইনস্টিটিউট অব পিস (ইউএসআইপি)-এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল ও পেন্টাগনের অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারীকদের সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানেই এই কথাগুলো বলেন লু।
[আরও পড়ুন: ফের অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগরে পাড়ি, নৌকায় অগ্নিকাণ্ডে বাংলাদেশি-সহ মৃত অন্তত ৯]
এদিন লু বলেন, “আমি বাংলাদেশ, সেখানে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থী ও মায়ানমারের অস্থিরতা এই অঞ্চলে কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে অনেক পর্যবেক্ষণ করেছি। ১০ লক্ষেরও বেশি লোকের জন্য ঢাকা যে উদারতা দেখিয়েছে তার সমর্থনে আমেরিকা বড় পরিসরে কাজ করেছে আমেরিকার সঙ্গে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির কক্সবাজার পরিদর্শন করার সুযোগ আমার হয়েছে। আমি এসব শরণার্থীকে ঘরে ফেরানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলোর একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছি। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের অংশীদারদের বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতকে সমর্থন করতে হবে। যাতে তাদের দেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীলতা বাড়তে না পারে। এবং সমস্ত চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলা করতে পারে।”
উল্লেখ্য, মায়ানামারের এই সংঘর্ষের জেরে বাংলাদেশে ফের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল নামার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যা নিয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। পড়শি দেশে সংঘর্ষের জেরে রোহিঙ্গারা দেশে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য সমস্ত রকম পদক্ষেপ করছে বিজিবি। পাঁচ বছর আগেও দুপক্ষের সংঘর্ষে ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল। যাতে চাপ বেড়েছে দেশের সরকারের। হিংসা, মানবপাচার এবং মাদক কারবারের কারণে ভয়ানক হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের একাধিক রোহিঙ্গা শিবিরের পরিস্থিতি। যা নিয়ন্ত্রণ করতে এখন হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন।