দীপঙ্কর মণ্ডল: মাধ্যমিকে রাজ্যের কিছু এলাকা স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করলেন গোয়েন্দারা। হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন ফাঁস রুখতে পরীক্ষার দিনগুলিতে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩.১৫ পর্যন্ত ওইসব এলাকায় ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করবে রাজ্য সরকার। সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। রেকর্ড সংখ্যক ১১ লক্ষ ২৬ হাজার ৮৬৩ পড়ুয়া এবার পরীক্ষায় বসার আবেদন করেছে। পরীক্ষা চলবে ১৬ মার্চ পর্যন্ত।
শেষবার পরীক্ষা হয়েছিল ২০২০ সালে। এবার প্রায় ৫০ হাজার পরীক্ষার্থী বেড়েছে। শনিবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মাস্ক পরে সবাইকে পরীক্ষা দিতে হবে। গতবছর পরীক্ষা না দিয়েও সবাই পাস করে গিয়েছে। কোভিড আবহ থাকলে এবারও তা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এই অবস্থায় স্কুলের সমস্ত ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসার আবেদন করেছে। এই কারণে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করছে পর্ষদ।
[আরও পড়ুন: পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট যাওয়া যাবে না শৌচালয়ে, মাধ্যমিকে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে কড়া পর্ষদ]
মাধ্যমিকে এবার ছাত্র সংখ্যা ৫ লক্ষ ৫৯ হাজার। ছাত্রীসংখ্যা ৬ লক্ষ ২৬ হাজার ৮০৪। মোট ভেন্যুর সংখ্যা ৪১৯৪। প্রত্যেক পরীক্ষাকেন্দ্রে আইসোলেশন রুম থাকবে। কোনও পরীক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কাছাকাছি হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিতে পারবে। দু’বছর আগের তুলনায় এবার ১৩৫৫ পরীক্ষাকেন্দ্র বেড়েছে। কল্যাণময়বাবু জানিয়েছেন, লেট ফাইন দিয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ফর্ম ফিলাপ হয়েছে। যারা তা করেনি তাদের অ্যাডমিট পাঠানো হয়নি।
পরীক্ষা শুরুর প্রথম সোয়া এক ঘণ্টা শৌচালয়ে যেতে পারবে না মাধ্যমিক পড়ুয়ারা। হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে এই ব্যবস্থাও নিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সকাল ১১.৪৫-এ প্রশ্নপত্র বিলি শুরু হবে। বারোটায় শুরু হয়ে পরীক্ষা শেষ হবে তিনটেয়। আগে বাথরুম বা অন্য কারণে হলের বাইরে যাওয়ার অনুমতি মিলত পরীক্ষা শুরুর ৪৫ মিনিট পরে। পরীক্ষাকেন্দ্রে সেন্টার ইনচার্জ, অফিসার ইনচার্জ, ভেন্যু সুপারভাইজার, অ্যাডিশনাল ভেন্যু সুপারভাইজার ও পর্ষদ প্রতিনিধি ছাড়া কেউ মোবাইল রাখতে পারবেন না। পার্শ্ব শিক্ষক ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের পরীক্ষা প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়েছে। নিজের ছেলেমেয়ে বা কোনও আত্মীয় পরীক্ষার্থী থাকলেও শিক্ষক–শিক্ষিকাদের স্কুলে আসতে হবে। তবে তাঁদের পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ নিষেধ।
পরীক্ষার্থীর সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে এবার একজন ঢুকতে পারবেন। শুধুমাত্র প্রথমদিন মিলবে এই অনুমতি। তবে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অর্থাৎ ১১.১৫ মিনিটের মধ্যে সেই অভিভাবককে বাইরে চলে আসতে হবে। শারীরিক প্রতিবন্ধী, দৃষ্টিহীন ও বধির পরীক্ষার্থীরা এবারও ৪৫ মিনিট বাড়তি সময় পাবে। কারও শ্রুতিলেখক দরকার হলে পরীক্ষাকেন্দ্রে পর্ষদের অনুমতি নিতে হবে।
[আরও পড়ুন: জনসংযোগেই বাজিমাত? রাজ্যে সবুজ ঝড়ের মাঝেই তাহেরপুরে কীভাবে অটুট বামদূর্গ?]
শুধু পরীক্ষার্থীই নয় শিক্ষক–শিক্ষিকারাও মোবাইল, স্মার্ট ঘড়ি, ক্যালকুলেটর–সহ কোনও বৈদ্যুতিন যন্ত্র পরীক্ষা চলাকালীন কাছে রাখতে পারবেন না। প্রত্যেক পরীক্ষার্থী উত্তরপত্রের প্রথম পাতায় নিজের নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং রোল নম্বর সঠিক লিখেছে কি না তা অ্যাডমিট ধরে মিলিয়ে নিতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পরে কেউ চাইলে খাতা জমা দিতে পারবে। তবে সেই পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্র জমা রাখতে হবে। পরীক্ষা শেষে নির্দিষ্ট ছাত্র বা ছাত্রী তার প্রশ্নপত্র ফেরত পাবে। প্রয়োজনে থানায় এফআইআর করে তা দ্রুত জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি।